বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের লেনদেনে নিজ নিজ মুদ্রা অর্থাৎ টাকা ও রুপি ব্যবহার করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। আন্তঃদেশীয় লেনদেনের সুবিধার্থে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এবং আইসিআইসিআই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলবে। ভারতের দুটি ব্যাংকও বাংলাদেশের দুটি ব্যাংকে একই ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলবে।
সংশ্লিষ্টদের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গ্লোবাল অ্যাকাউন্টিংয়ে ‘ভোস্ট্রো’ ও ‘নস্ট্রো’ অ্যাকাউন্ট নামে পরিচিত এসব অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, টাকা ও রুপিতে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ফলে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ কমবে। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। ভারত ও বাংলাদেশের আরও ব্যাংক ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠবে।
চলমান ডলারের সংকটের মধ্যে কয়েক মাস ধরে টাকা ও রুপিতে লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়টি নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল। তবে দুই দেশের মধ্যকার সব দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থানীয় মুদ্রায় করা হবে না।
গত অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রুপিতে লেনদেন করা হবে এবং বাকি মার্কিন ডলারে পরিশোধ করা হবে বলে। এদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানি হয়েছে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এগুলোর লেনদেন হবে রুপি ও টাকায়।
এর আগে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিনিধিদল দুই দেশের মধ্যে লেনদেন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা সফর করেন। গত ১১ এপ্রিল প্রতিনিধিদল ইস্টার্ন ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দুই দেশের মধ্যে টাকা ও রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্য পেমেন্ট পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েক মাস আগে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রুপিতে সরাসরি লেনদেনের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিল। এ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে । বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ গণমাধ্যমকে বলেন, তারা বেশ কিছুদিন ধরেই দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির সমতুল্য লেনদেন টাকা ও রুপিতে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, পদ্ধতিগত পদক্ষেপগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে টাকা ও রুপির লেনদেন শুরু হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।