পাবনা প্রতিনিধি : টেবিলে প্লেটে থরে থরে সাজানো নানা রঙের আর নানা স্বাদের পিঠা। পাকান, ভাঁপা, পুলি, চিতই, পাটিশাপটা, নকশি পিঠা, ফুল পিঠা, মাল পোয়া, রস পাকনসহ নাম না জানা হরেক রকম পিঠা। এ যেন রসের মেলা। নানা স্বাদের বাহারী এসব পিঠা দেখলেই মুখে জল চলে আসবে যে কারো।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি ) সকালে এমনই আয়োজন ছিল পাবনা সদর উপজেলার সাধুপাড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি কামরুন নাহার লুনার পিঠা উৎসবে।
কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহি নানা রকম পিঠা। যান্ত্রিক জীবনে আর আধুনিকায়নের যুগে নতুন প্রজন্ম কতটুকুই বা জানে পিঠার কথা। গ্রাম-বাংলার বিলুপ্ত প্রায় লোকজ ঐতিহ্যবাহি খাবার ধরে রাখা ও নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রথমবারের মতো পাবনায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো পিঠা উৎসব।
পাবনা সদর উপজেলার সাধুপাড়ায় সুলতান আহমেদের বাংলোবাড়িতে প্রথমবারের মতো এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করে বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ও নারী উদ্যোগতা কামরুন নাহার লুনা ।
সোমবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে পিঠা উৎসব কেকে কেটে উদ্বোধন করেন পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স ।
বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি কামরুন নাহার লুনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পাবনা পৌর সভার মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান, পাবনা সদর উপজেলার ভাইস শামসুননাহার রেখা, পাবনা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শাওয়াল বিশ্বাস, বসুন্ধরা শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য আলী আকবর রাজু, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম ফারুক, কালের কন্ঠের পাবনা জেলা প্রতিনিধি প্রবীর সাহা, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সহ-সভাপতি বাবলা ওয়াজেদ, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা সদর উপজেলা শাখার সভাপতি ফারহানা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক নুসরাত জাহান স্বর্ণা, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলার সহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. রিটন প্রমুখ।
বিভিন্ন নামের পিঠা তৈরী করে নিয়ে উৎসবে অংশ নেন গৃহিণী, শিক্ষার্থী অনেকে। পিঠা উৎসব নিয়ে উচ্ছসিত তারা বলছেন, এতে বাড়ছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। ফিরে আসবে হারানো গ্রামীণ ঐতিহ্য। এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবি তাদের। উৎসবে বাহারী সব পিঠা দেখে মুগ্ধ হন নানা বয়সী দর্শনার্থীরা।
পিঠা উৎসবে পাবনার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০ রকমের পিঠা নিয়ে অংশ নেয় ১২ জন প্রতিযোগী।
বসুন্ধরা শুভসংঘের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি কামরুন নাহার লুনা বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের সাথে পিঠার পরিচয় করে দিতে ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই নবমবারের মতো এই পিঠা উৎসবের আয়োজন। এর মাধ্যমে এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা দেশীয় পিঠার নাম জানতে পারবে। সেইসাথে যাতে তারা এই প্রযুক্তির যুগে তাদের মায়ের কাছে পিঠার আবদার করে।’
পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, ‘পিঠার যে কতরকম নাম থাকতে পারে এখানে এসে সেটি জানতে পারছি। এমন আয়োজনকে আমরা সবসময় উৎসাহিত করে থাকি। আগামী দিনগুলোতে আরো সুন্দর ও বড় পরিসরে করতে পারি সে চেষ্টা ও সহযোগিতা থাকবে। যাতে দেশে ও বিশ্বে আমাদের পিঠার সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে।
পাবনা পৌরসভার মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান বলেন আমারা অনেককিছুই হারিয়ে ফেলেছি। এখনকার ছেলেমেয়েরা পিঠা খেতে চায়না। তাদের ইচ্ছা চাইনিজ খাবারের দিকে। এই পিঠা উৎসবের আয়োজন নি:সন্দেহে ভালো উদ্যোগ।