বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ’২৫ সালের মধ্যে ৪৬ কূপ খনন
অবশেষে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে পেট্রোবাংলা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সরকার ৪৬টি কূপ খনন করবে। এর মধ্যে ১৭টি কূপ খনন করার জন্য তিন কোম্পানি নির্বাচিত হয়েছে। এ ছাড়া পরিকল্পনায় গ্যাসের পাশাপাশি কয়লা উত্তোলনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।
সরকার নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করার নির্দেশ দেয়। ইতোমধ্যে জ্বালানি বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা জ্বালানি বিভাগে জমা দিয়েছে।
পরিকল্পনায় গ্যাস কূপ খনন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে সরকার ৪৬টি কূপ খনন করবে। এর মধ্যে ১৭টি কূপ খনন করার জন্য তিন কোম্পানি নির্বাচিত হয়েছে। আগামী ১০০ দিনের মধ্যে তারা গ্যাস কূপ খনন করার জন্য তিনটি বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করবে। এই তিনটি কোম্পানি হচ্ছে সিনোপ্যাক, গ্যাজপ্রম ও এরিয়েল। দেশে সাধারণত বাপেক্স বেশিরভাগ কূপ খনন করে।
কিন্তু সরকার দেশীয় জ্বালানির ওপর গুরুত্ব দেওয়ায় একসঙ্গে বেশি কূপ খনন করতে হচ্ছে। বাপেক্সের একার পক্ষে এই কূপ খনন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য বিদেশী ঠিকাদারদের দিয়ে নতুন করে কূপ খনন করা হচ্ছে।
সরকারের পরিকল্পনা বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে মোট ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এর মধ্যে চারটি কূপ খনন করা হবে বেশি গভীরতায়। অর্থাৎ ডিপ ড্রিলিং। মাটির অনেক গভীরে হার্ড রক বা পাথর রয়েছে। এই পাথর ভেদ করে মাটির নিচে কী রয়েছে তা এখনো দেশে দেখা হয়নি। নতুন এই চারটি কূপ খনন করলে ওই স্তরে কী রয়েছে তা জানা যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
কূপ খনন করা ছাড়াও বছরভিত্তিক কূপ খনন করা, আনুমানিক গ্যাস উত্তোলনের পরিমাণ, বিভিন্ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা জরিপ এবং ডিপিপি প্রণয়ন করার দিকে তারা নজর দেবে।
পাইপ লাইন নির্মাণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর পাইপ লাইন নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ নিশ্চিত করা, পাইপলাইনের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য পরামর্শক নিয়োগ, মহেশখালী-মাতারবাড়ি উচ্চ চাপের ৫২ ইঞ্চি ব্যাসের ২৯৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণে সরকারের সম্মতি আদায়, জিটিসিএল এর বিভিন্ন পাইপ লাইন নির্মাণে দাতাদের কাছ থেকে অর্থ প্রাপ্তির চেষ্টা করা, শাহবাজপুর এবং ভোলা উত্তর থেকে বরিশাল পর্যন্ত পাইপ লাইন নির্মাণে সম্ভাব্যতা শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ ও আমদানি প্রসঙ্গে পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, কক্সবাজার মাতারবাড়ি স্থায়ী টার্মিনাল নির্মাণে জায়গা চূড়ান্ত করা, ভারত থেকে এলএনজি আমদানির জন্য এইজ এনার্জির সঙ্গে খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত করা, মহেশখালী তৃতীয় ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণে সামিটের সঙ্গে খসড়া চুক্তি সই, দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির জন্য সামিটের সঙ্গে পৃথক আরও একটি চুক্তির খসড়া সই, দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির জন্য পেরিন্টিস মালয়েশিয়ার সঙ্গে খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে।
এ ছাড়া ভোলার পর এবার সিলেটের জকিগঞ্জ থেকেও সিএনজি করে গ্যাস আনার চিন্তা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ আইন ২০১০ অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চায়।
প্রিপেইড মিটার প্রসঙ্গে পরিকল্পনায় বলা হয়, তিতাস গ্যাসের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ, এডিবির সাড়ে ৬ লাখ, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বিশ্ব ব্যাংকের ১ লাখ ২৮ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপনে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে।
খনি সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে, বড়পুকুরিয়ার সম্প্রসারিত অঞ্চল থেকে কয়লা তোলার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি আদায় এবং মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্প সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলা পরিচালক (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, সরকার গঠনের পর পর আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয় ১০০ দিনের পরিকল্পনা করতে। আমরা সবার মতামত নিয়ে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে জমা দিয়েছি। এখন কাজ শুরু করব। এর মধ্যে কিছু কাজ আগে থেকেই চলমান আছে আমাদের সেটাই এগিয়ে নিয়ে যাব।