পাবনা প্রতিনিধি : বাড়িতে সেই পুরোনো টিনের ঘর,বৃষ্টি হলেই পরে পানি,ভিজে যায় আসবাবপত্র,বই ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র । এ চিত্র ৬৯ পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়া ) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের বাড়ির । সরেজমিনে গিয়ে একজন সংসদ সদস্যের বাড়ির এমন চিত্র দেখে যে কেই হতাস হবেন । যেমনটি হয়েছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজেই । ১৯৯৮ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য আহমেদ তফিজ উদ্দিন মাষ্টারের চল্লিশায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসেছিলেন সাতবাড়িয়ায় মরহুম তফিজ উদ্দিন মাষ্টারের বাড়িতে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সমবেদনা জানাতে । সংসদ সদস্য মরহুম তফিজ উদ্দিন মাষ্টারের বাড়িতে ঢুকেই প্রধানমন্ত্রী নিজেই আশ্চর্য হন , বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সারথি, তিন মেয়াদের এমপি, দুই মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান – এই তার বাড়ি ? এত সাধারণ পরিবারের কী অসাধারণ দারিদ্রের প্রতিচ্ছবি !
এমনই এক পরিবারের সন্তান সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির । বাবার রেখে যাওয়া পারিবারিক সূত্রে পাওয়া সেই মরিচা পড়া টিনের ঘরেই বসবাস করেন সংসদ আহমেদ ফিরোজ কবির । বাংলাদেশের আর কোন সংসদ সদস্যের বাড়িতে মনে হয় এমন দৃশ্য দেখা যাবে না ।
নিজে সংক্রমণ হবেন এমনটা না ভেবে নির্বাচনী এলাকার সবশ্রেণির মানুষ কেমন আছেন এই মহাপ্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে। তাইতো পুরোটা সময় এখন ব্যয় করেছেন করোনা ভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি কর্মহীন, অসহায়, দুস্থ, দরিদ্র-হতদরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষগুলোর খোঁজখবর নিয়েছেন। আর তৎপর রয়েছেন তার ত্রাণ টিম। মোবাইলে ফোন পাওয়ার সাথে সাথে ত্রাণ টিম ছুটে যাচ্ছেন সেই বাড়িতে। পৌছে দিচ্ছেন ত্রাণ সামগ্রী ।
সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির এমনই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন করোনা দূর্গত মানুষের জন্য। এছাড়াও তিনি স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন, বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক তহবিল গঠন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়িক শ্রেণির সাথে বৈঠক ও নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন।
নাজিরগঞ্জের মোহনপুর গ্রামের বয়স্ক নারী রিজিয়া বেগম, সেলিনা খাতুন, পছাত্তর বছরের ওহাব সরদার, সত্তর বছরের আজিম উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘ভোট যকন আসে, তকন চিয়ারমিন, মেম্বর আসে ভোট চাবির। তারপর সব ভুলি যাই। শুনিছি করোনা আয়ছে। ওই রোগ নাকি ছুয়াছি। তারপরও ছুঁটি আয়ছে এমপি সাহেব। ওটাতো আমারে তফিজির বেটা ফিরোজ।
হোন্ডা নিয়ে আসি খবর নেছে চাচি চাচা তুমারে খাবার আছে কি না । এভা্বে খবর নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন সংসদ ফিরোজ কবির । আমরা এম্বা এমপিই চাই। যে আমাদের কষ্টের কথা বোঝে।’ ভোটের সময়ে চেয়ারম্যান মেম্বররা আসে। পরে আর খোঁজখবর নেয়না। এমপি সাহেব এসেছেন নিজে ত্রাণ নিয়ে। আমরা খুব খুশি। তার আগে এমপি সাহেব মটরসাইকেল নিয়ে আমাদের বাড়িতে আইছিল।
জনগনকে সুরক্ষিত রাখতে সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে নিজ হাতে হ্যান্ড সেনিটাইজার তৈরি করেছেন এবং তা বীনা মূল্যে মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছেন ।
কৃষকদের উৎসাহ প্রদান করতে নাজিরগঞ্জ ও সাগরকান্দি ইউনিয়নের দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে পানিতে নেমে ধান কেটেছেন ।
সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, জনগণের ভোটেই জনপ্রতিনিধি হওয়া যায়। জনগণকে বাদ দিয়ে কিছু করাটা জনপ্রতিনিধির কাজ নয়। যাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। তাদের খোঁজখবর রাখাটা আমার নৈতিকতার মধ্যেই পড়ে। যেমনটি প্রয়াত সাংসদ আমার বাবা আহমেদ তফিজ উদ্দিনের কাছ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছি ।
আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, করোনা দূর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে এক সংগে কাজ করতে হবে। এ জন্য সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ঘর থেকে বের না হয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এর বিপরীতে গেলেই আমাদের নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবো ঘরে, পরিবারে। পাড়া-মহল্লায়। তিনি বলেন, এলাকা এলাকা ঘুরছি। সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি। অপরিচিত লোকজন যেন এলাকায় ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে আহবান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ না খেয়ে থাকে সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ দিয়েছেন। এগুলো সুষ্ঠুভাবে সঠিক মানুষের ঘরে পৌঁছাচ্ছে কিনা সেটা আমাকে, আপনাকেই দেখতে হবে। অসৎ, দূর্নীতিপরায়ন, অসাধুদের ধরিয়ে দিতে হবে আইনের কাছে। কর্মহীন, দরিদ্র-হতদরিদ্র, দুস্থ, অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত আছে। কেউ না খেয়ে থাকবে না। তিনি সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ।