আল এনায়েত করিম রনি,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী গত ২৭ মার্চ ভোরে খোলা স্থানে পূত্র সন্তান প্রসব করে। ট্রিপল নাইন নাম্বারে কল পেয়ে নবজাতক ও ওই অসুস্থ্য নারীকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। শিশুটিকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হলেও রাতেই শিশুটি মারা যায়। পরে জঘন্য এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তে পুলিশ ডিএনএ টেস্টের জন্য আবেদন করে। অপরাধীকে ধরতে পুলিশের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয়রা। কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার জানান, কুড়িগ্রাম শহরের খলিলগঞ্জ এলাকার বিএডিসি গোডাউন সংলগ্ন জয়বাংলা মোড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী গত ২৭মার্চ ভোরে রাস্তার পাশে পূত্র সন্তান প্রসব করে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশকে জানালে ভোরেই ওই নারী ও শিশুটিকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
ভবঘুরে ওই নারী চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ্য হয়ে উঠলেও ওইদিন রাত ৯টার দিকে মারা যায় শিশুটি। শিশুটির মৃত্যুতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি নথিভক্ত করে এসআই জাহিদ হাসান স্বাক্ষরিত ডিএনএ টেস্টের একটি আবেদন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: ছাদেকুর রহমান সেটি গ্রহন করেন। আবেদনে নবজাতক শিশু (ছেলে) এর পিতৃ পরিচয় যাচাই করার জন্য শিশুটির ডিএন নমুনা সংগ্রহ পূর্বক সংগৃহিত ডিএনএ নমুনা চীফ ডিএনএ এ্যানালিস্ট, ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি অব বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি নতুন ভবন, মালিবাগ ঢাকার মাধ্যমে পরীক্ষা পূর্বক প্রোফাইলিং করার জন্য প্রয়োজন বলে জানানো হয়। পুলিশের এ মানবিক কাজে সাধুবাদ জানিয়েছে সচেতন মহল। বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু জানান, কুড়িগ্রামে প্রায়ই ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীন নারীদের সাথে এমন জঘন্যতম অপরাধ করা হচ্ছে। ঘটছে অনাকাংখিত প্রেগনেন্টের ঘটনা। দায় নিতে চায় না কেউ।
বিকৃত রুচির কিছু মানুষ বারবার এ ঘটনা ঘটিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে অপরাধীদের মুখোষ উন্মোচন করতে পারলে এ ধরণের অপরাধ কমে যাবে। বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মো. নবিউর রহমান জানান, শিশুটি ইমম্যাচিউরুট ছিল। রাতেই মারা যায়। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানা থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং নমুনার জন্য ডিএনএ টেস্টের আবেদন করা হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরবর্তীতে পিতৃত্ব পরিচয় সনাক্তে কাজে লাগবে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, এটি একটি অমানবিক কাজ। একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী প্রেগন্যান্ট হয়েছে। আমরা এই জঘন্য অপরাধের সাথে যে বা যারা জড়িত তাকে সনাক্তে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ পূর্বক অভিযুক্তকে ধরতে কাজে লাগাবো। যাতে ভবঘুরে নারীটি সুবিচার পান।