রিমন পালিত, বান্দরবান প্রতিনিধি : পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ী সম্প্রদায়ের অন্যতম সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবী। চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাঁই, তনচংগ্যা সম্প্রদায়ের বিষু, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এই উৎসব বৈসু নামে পরিচিত হলেও সকলে বর্ষ বিদায় এবং নববর্ষকে বরন উপলক্ষে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এই উৎসব গুলো পালন করে থাকেন।
কিন্ত করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাবের কারনে এবারও বান্দরবান জেলায় হচ্ছে না প্রাণের বৈসাবী উৎসব। প্রতিবছর এপ্রিল প্রথম সপ্তাহ থেকে পাহাড়ের এই উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত থাকতো পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। কি শহর কি গ্রাম প্রতিটি এলাকায় হতো বর্নিল এই উৎসব এর আয়োজন। ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা, গ্যাংঘুলি গানের অাসর,র্যালী পাজন ও পিঠা পায়েস রান্না, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ নানা আয়োজনে মুখরিত থাকতো পাহাড়ের প্রতিটি গ্রামঅঞ্চল।
মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে গতবছর এর মতো এবারও বড়সড়ে উৎসব বাদ দিয়ে একান্ত ঘরোয়াভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে এই উৎসব পালন করবেন পাহাড়ে বসবাসরত জনগণ। বান্দরবান জেলায় বসবাসরত পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ট হলো মারমা ত্রিপুরা ও তনচংগ্যা সম্প্রদায়। বান্দরবান সদর,রেইচা, সুয়ালক, বালাঘাটা, কালাঘাটার বিভিন্ন পাড়ায় মারমা সম্প্রদায়ের বসবাস।
১৫ এপ্রিল পালন করে থাকে সাংগ্রাঁই জল উৎসব যা জলকেলী উৎসব নামে পরিচিত। প্রতিটা বছর ঐতিহ্যবাহী এই জল উৎসব পালন করা হয়েছিল বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গাতে। কিন্ত করোনার মহা থাবায় সাংগ্রাই আয়োজক কমিটি পার্বত্য অঞ্চলের সমস্ত উৎসবের আয়োজন বাতিল করেছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে বান্দরবান জেলা সাংগ্রাই উৎসব কমিটি জানান, আমাদের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিলো, কিন্ত করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জনসমাগম এড়াতে আমরা এই বছর আমাদের উৎসব বড়পরিসরে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তবে বিহারে বিহারে আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্বল্প পরিসরে পুজা দিবো এবং পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে বসে এই উৎসব পালন করবো।
সাংগ্রাঁই তাদের প্রাণের উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে কতো প্রস্তুতি থাকতো তাদের, কিন্তু করোনার কারনে তারা এই বছরেও এই মহা আনন্দ উৎসব হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। তনচংগ্যা সম্প্রদায়ের প্রবীন ব্যক্তি ভুষন চন্দ্র তনচংগ্যা জানান, করোনার কারনে আমরা এইবারও এই উৎসব করতে পারছিনা বড় পরিসরে।