ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: বিষাক্ত মদপানে শরিফুল ইসলাম নাঈম (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার তিন মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিমের উপস্থিতিতে ঈশ্বরদীর পূর্ব টেংরী গোরস্থান পাড়ার কেন্দ্রীয় কবর থেকে পুলিশ লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নাইম উপজেলার মশুরিয়া পাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ঢাকায় কয়েকজন যুবক-যুবতি মদপানে অসুস্থ হয়ে পড়ে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ জানুয়ারি নাঈম মারা যায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করে। তার আগে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লাশের ময়নাতদন্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত কবর থেকে লাশ তোলার নির্দেশ দেন।
লাশ তোলার সময় উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম, ঈশ্বরদী আমবাগান ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আনোয়ার ইসলাম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল হক।
রাজধানীর ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল হক বলেন, ‘ওই সময় ময়নাতদন্ত না হওয়ায় এখন করা হচ্ছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।’
এ ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য চাওয়া হলে ডিবি গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মসিউর রহমান বলেন, বিষাক্ত মদপানে তিন-সহদর বন্ধুর মৃত্যু হয়। যারা এই মদ তাঁদের কাছে সরবরাহ করেছিল প্রথমে আমরা তাদের শনাক্ত করি। এরপর ভেজাল মদ তৈরির চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। শেষে আমরা কারখানার সন্ধান বের করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাটারা এলাকা থেকে ভেজাল মদ তৈরির চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মাদক তৈরির কারখানা থেকে প্লাস্টিক বোতল, কয়েক ড্রাম স্পিরিট, মিনারেল ওয়াটারের বোতল এবং সুগার সিরাপ জব্দ করা হয়। কারখানাটির মালিক মো. নাসির। গ্রেপ্তার মো. জাহাঙ্গীর মূলত বিদেশি মদের পুরনো বোতল সরবরাহ করতেন। পরবর্তীতে তিনি ওই কারখানায় চিফ কেমিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাকেও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। দুই জন মূলহোতাসহ মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সজ্ঞানে ভেজাল ক্ষতিকর পণ্য বিক্রির অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।’
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য মতে, মাদক কারবারিরা রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা থেকে ১০ হাজার টাকায় এক গ্যালন স্পিরিট কিনতেন। তারপর মিনারেল ওয়াটারের সঙ্গে স্পিরিট, চিনি, রঙ মিশিয়ে বিদেশি মদের পুরনো বোতলে ভরে সেগুলো বিক্রি করা হতো।