আল এনায়েত করিম রনি, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে লকডাউনের মধ্যেও কাজের সুযোগ পাওয়ায় খুশি কৃষি শ্রমিকরা। প্রশাসনের ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এসব শ্রমিককে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে কর্মহীন মানুষগুলো জেলার বাইরে গিয়ে কাজের মাধ্যমে পরিবারে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে পারবে একারণে খুশি তারা। শনিবার পর্যন্ত জেলা থেকে ৮৪৯জন শ্রমিক ধান কাটতে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
জানা যায়, চলতি বছর বিরুপ আবহাওয়ার মধ্যেও মাঠে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনা বিস্তারের কারণে দেশে লকডাউন ঘোষণা করায় বিপাকে ছিল কৃষি জমির মালিকরা। তবে সরকারের সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিম্নআয়ের শ্রমিকরা জেলার বাইরে গিয়ে পাচ্ছে কাজের সুযোগ। অপরদিকে জমির মালিকদের মধ্যে নেমে এসেছে স্বস্থি। জেলা প্রশাসন কাজে যেতে ইচ্ছুক এমন শ্রমিকদের তালিকা করতে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও, অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সমন্বয়ে টিম গঠন করে আইডি কার্ড ও ছাড়পত্রের মাধ্যমে এসব শ্রমিকদের বাইরে পাঠাচ্ছে। এরফলে দারিদ্রপীড়িত ও কর্মহীন কুড়িগ্রাম জেলার কৃষি শ্রমিকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে কাজের সুযোগ। ফলে ভীষণ খুশি তারা। জেলায় ৩ থেকে ৪ শ’ টাকা মজুরী দিয়ে বড় সংসার প্রতিপালন করতে হিমসীম অবস্থা হয় তাদের। মাঝেমধ্যে কাজও থাকে না। অপরদিকে বাইরের জেলায় গিয়ে শ্রম দিয়ে তারা গড়ে ৬ থেকে ৭শ’ টাকা আয় করতে পারে। ফলে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে ছুটছে এসব শ্রমিক।
ধান কাটতে যাওয়া নাগেশ্বরীর কচাকাটা থানার শ্রমিক মনজু, কালাম ও ছামসুল জানান, কাজকাম নাই ঘরে বসি ছিলাম। সরকারি সহযোগিতায় জেলার বাইরে কাজ করতে যেতে পারছি, এজন্য আমরা খুশি। রমজানের পর সামনে ইদ। এখন কাজ করে টাকা জমাতে পারলে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারবো।
কুড়িগ্রামের কর্ণফুলি স্পেশাল পরিবহনের সত্বাধিকারী আল আমিন জানান, লকডাউন থাকায় বাস মালিকসহ শ্রমিকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বোরো ধান কাটতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রমিক পাঠানোর ব্যবস্থায় খুশি বাস মালিকরাও। লকডাউন শিথিল করে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন-মান স্বাভাবিক করতে সরকারের প্রতি দাবী বাস মালিকদের।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ধান কাটার জন্য কৃষি শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে বোরো ধান কর্তনের জন্য কুড়িগ্রাম থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষি শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। এজন্য মাইকিং করেণা চালানো হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় ইউএনও, ওসি এবং কৃষি অফিসারের সমন্বয়ে একটি টিম শ্রমিকদের বাছাই করছে। তারা আইডি কার্ড, ছাড়পত্রের বিষয়ে কাজ করছে। শনিবার পর্যন্ত কুড়িগ্রাম থেকে ৮৪৯জন শ্রমিক কাজে গেছে। লকডাউন চলাকালিন সময়ে বিধি মেনে শ্রমিক পাঠানো অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।