পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে মুক্তি খাতুন রিতা (২৭) নামের এক গৃহবধুকে গলা কেটে নৃশংশভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে ঈশ্বরদী পৌরসভার মশুড়িয়াপাড়া এলাকায় লোমহর্ষক এই ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডের সময় রিতার শ্বাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু (৫৫) কেও গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় তার আর্তচিৎকারে খুনিরা পালিয়ে যায়। তারা সংখ্যায় ৫ জন ছিল বলে শ্বাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু উপস্থিত পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান।
নিহত রিতা ওই এলাকার বাসিন্দা ও রূপপুর প্রকল্পের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বায়োজিদ সারোয়ারের স্ত্রী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাবনার ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির, ওসি আসাদুজ্জামান, পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত গৃহবধু রিতার শ্বাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু জানান, তার ছেলে বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরি করেন। সেই সুবাদে বায়োজিদ সারোয়ার বেশ কিছু মানুষকে রূপপুর প্রকল্পে চাকরিও দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় ৫ জন যুবক চাকরির জন্য তার বাড়িতে আসে। বায়োজিদ সেই সময় বাজারে থাকায় ড্রইং রুমে বসিয়ে তাদের আপ্যায়ন করান তার স্ত্রী মুক্তি খাতুন রিতা। বেনু খাতুন সে সময় তার ঘরে কোরআন শরীফ পড়ছিলেন।
হঠাৎ হত্যাকারীরা তার ঘরে ঢুকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। তিনি চিৎকার শুরু করলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায় তারা। পরে তিনি পুত্রবধুর ঘরে গিয়ে তার গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি বলেন, হত্যাকারীদের মধ্যে একজনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। তার নাম সাব্বির হাসান, বাড়ি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল চরগোবিন্দপুর গ্রামে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।
রিতার স্বামী বায়োজিদ সারোয়ার জানান, তিনি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাংলা পাওয়ার কোম্পানীতে চাকরি করেন। রূপপুর প্রকল্পে চাকরির জন্য তার মামা বাড়ির এলাকা থেকে কিছু মানুষ বাড়িতে আসবে তাই বাজারে গিয়েছিলেন বাজার করতে। এসে দেখেন তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। তিনি কাউকে দেখেননি। তবে তার মায়ের কাছ থেকে সব শুনেছেন বলে জানান।
এলাকাবাসী জানান, বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরির কারণে টাকার বিনিময়ে অনেক মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। হয়তো চাকরির জন্য টাকা-পয়সা লেনদেন এর বিষয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটতে পারে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, অনেকগুলো বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে যে, কি কারণে রিতাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিআইডির বিশেষ টিম এসে আলামত সংগ্রহ করার পর লাশ ময়না তদন্ত করা হবে।