আল এনায়েত করিম রনি, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খোকার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্যরা। শনিবার (০৮ মে) দুপুরে প্রেসক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত সদস্য মমতাজ পারভীন।
সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গুনাইগাছ ইউনিয়নে ৬হাজার ১শ ৭৮ পরিবারের মাঝে ৪শ ৫০ টাকা করে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ১শ টাকা এবং করোনাকালীন সরকারের বিশেষ সহায়তা ৬শ ২৫ পরিবারের মাঝে ৪শ টাকা করে ২শ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এরপর চেয়ারম্যান তা বিতরনের জন্য সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের কাছে প্রকৃত দরিদ্রদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি গ্রহন করতে বলেন এবং সকল ইউপি সদস্যদের সমন্বয়ে তালিকা অনুযায়ী তা বিতরন করার কথা বলে ২৯ এপ্রিল পরিষদের রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর নেন।
এরপর প্রকৃত দরিদ্রদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ইউপি সদস্যদের কাছে না নিয়ে চেয়ারম্যান তার স্ত্রী, মোটর সাইকেলের ড্রাইভার, বাড়ির কাজের লোক, দফাদার এবং তার নিকট আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে স্বচ্ছল ও একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে গোপনে তালিকা তৈরি করে। একই পরিবারের মধ্যে ৪-৫ জনের তালিকা করে পরিবার প্রতি ২জনকে টাকা দিয়ে বাকীদের টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করার পায়তারা করছেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ইউপি সদস্যদের তালিকা গ্রহন করেন এবং তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে তালিকা অনুযায়ী হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। দরিদ্রদের মধ্যে যারা টাকা দিতে পারেনি তাদেরকে বাদ দিয়ে তুলনামূলক স্বচ্ছল ব্যক্তিদেরকে টাকার বিনিময়ে তিনি কার্ড করে দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইউপি সদস্যরা বলেন, তাদের জানা মতে ইউনিয়নের শতাধিক হতদরিদ্র ব্যক্তির কাছ থেকে ৯শ টাকা করে আদায় করেও তাদের ভাতার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
হতদরিদ্র ভুক্তভোগীদের এ অভিযোগ নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে গেলে ইউপি সদস্যদের অশ্লিল ভাষায় গালাগালিসহ তাদের সাথে দূর্ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাড়িয়ে দেন চেয়ারম্যান। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ইউপি সদস্যরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত সদস্য মমতাজ পারভীন, মোছাঃ আছমা বেগম, সিমা রাণী। এ বিষয়ে গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খোকার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের কথা শুনে সদুত্তর না দিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।