পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের ধুপুলিয়া গ্রামে কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় বাবা ও মায়ের অবহেলা আর অযত্মে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনাকে স্থানীয়রা সভ্যতার যুগে মধ্যযুগীয় বর্বরতা ও নৃশংসতা বলে করছেন। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ধুপুলিয়া গ্রামের কদরুল ইসলাম (বৈদী) ও ঝর্ণা খাতুন দম্পতির দুই মেয়ে এক ছেলের পর আবারও কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে। এতে ক্ষোভে নবজাতক শিশুটিকে অবহেলা আর অযত্নে কাপড়ে মুড়িয়ে ফেলে রাখার ঘটনা ঘটে। সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর প্রতি এমন অমানবিক আচরনের পরে অসুস্থ হয়ে শিশুটি মারা যায়। এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পরে পুরো এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও বলেন, কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার বিষয়টি স্বামী স্ত্রী পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছেও গোপন করে। পরে তারা স্বামী স্ত্রী মিলে কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে নব জাতকটিকে ঘরের একটি নির্জন স্থানে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে ফেলে রাখে। সকালে গৃহবধূ ঝর্ণার প্রসব জনিত কারনে রক্তক্ষরণ শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা সন্তান প্রসবের বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তারা একবার জানায় মৃত বাচ্চা হওয়ায় রাতেই মাটি চাপা দিয়েছে আবার বলে ছেলে সন্তান হয়েছে কাউকে দেখতে হবেনা। তখন বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের ও পাড়া প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। পরে বিকেলে সবাই তাদের ঘটনার বিষয়ে চাপ দিলে তারা স্বামী স্ত্রী ঘটনাটি খুলে বললে পরিবারের সদস্যরা মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সোমবার সকালে মারা যায় হতভাগ্য নবজাতক শিশুটি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফৈলজানা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সবুজ আলী জানান, আমি ঐ গ্রামের আশপাশের লোকের মুখে শুনেছি ঘটনাটি সত্য। সোমবার দুপুরে মৃত ঐ শিশুটির জানাযা শেষে দাফন করা হবে। তবে এটা অত্যন্ত অমানবিক একটি কাজ করেছে ঐ পাষন্ড বাবা মা।
এ বিষয়ে সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, এমন একটি ঘটনা আমরা জানতে পেরেছি। ঘটনাটি এখনও আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। ওসি চাটমোহর ঘটনাস্থলে গেছেন। তিনি সেখান থেকে আসলে বিস্তারিত জেনে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।