শেখ আবদুল্লাহ,আনোয়ারা(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি : পালাবদল এসেছে প্রকৃতিতে। বছর ঘুরে আবারও এসেছে জ্যৈষ্ঠ মাস। জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধুমাসও বলা হয়ে থাকে। মধুমাসের এসময়ে সারাদেশেই চোখে পড়ে গ্রীষ্মকালীন নানান ধরনের ফল। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও গ্রীষ্মকালীন আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, জামরুলসহ বিভিন্ন মৌসুমী রসালো ফলে ছেয়ে গেছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার। স্বাদেঅতুলনীয় ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এসব ফলের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।
সরেজমিনে উপজেলার চাতুরী চৌমুহনী বাজার,রুস্তম হাট, জয়কালি বাজার,মালঘর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখাযায়, প্রায় প্রতিটি বাজারেই গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফলের সমারোহ। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে লিচু, কাঁঠাল, আম, তালের শ্বাস, আনারস,জাম ইত্যাদি। এছাড়া মৌসুম শেষ হওয়ায় বিদায়ের পথে থাকা বাকি- তরমুজের মতো ফলও দেখা যাচ্ছেবাজারগুলোতে। এসব ফলের গন্ধ সুবাস ছড়িয়ে মাতিয়ে তুলছে সকল পথচারীদের। গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফলের মধ্যে বর্তমানেবাজারে ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে লিচু আর আম। এছাড়া নগরীর প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়ও ভ্যানে করে মৌসুমী ফলবিক্রি করছেন অনেকে। বাজারগুলো থেকে কিছুটা কম দামেই ফল বিক্রি হচ্ছে ভ্যানের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে। উপজেলারবিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি শত লিচু বিক্রি করা হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে,আনারস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে৬০ টাকা করে,কাঠাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি ফিস ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে,আম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা করে। এছাড়াওমাল্টা,জাম এসব বিক্রি হচ্ছে ১৩০/১২০ টাকা করে।
উপজেলা প্রাণকেন্দ্র চাতুরী চৌমুহনী বাজার ঘুরে দেখা যায়,বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌসুমী ফল বিক্রিতে। তারামূলদোকানের সামনের অংশে মৌসুমী ফল রেখে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এ বাজারে বেশি বিক্রি হচ্ছে লিচু।এছাড়া হিমসাগর, লেংড়াসহ বিভিন্ন জাতের আমও শোভা পাচ্ছে ফল দোকান গুলোতে। দেখা যায় ট্রাকে করে বিভিন্ন অঞ্চলথেকে আনারসসহ বিভিন্ন দেশীয় ফল আমদানি করতেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ফলবাজারের বেশির ভাগ অংশ থাকবে মিষ্টি ও রসালো আম আর আনারাসের দখলে।
চাতুরী চৌমুহনীতে দেশীয় ফল কিনতে আসা আবুল মুনছুর নামের এক ক্রেতা জানাই,মৌসুমের শুরু হিসেবে সব কিছুর দামএকটু বেশি। বাজারে ভরপুর মৌসুমী ফল থাকলেও দাম চড়া। তবে প্রশাসনের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা। যাতেসকল শ্রেণির ক্রেতারা এসব মৌসুমী ফল কিনতে পারে। পাশাপাশি ভোক্তাদের ফরমালিন মুক্ত ফল কেনা নিশ্চিত করতেবাজারে অভিযান পরিচালনা করতে অনুরোধ জানান প্রশাসনকে।
চাতরী চৌমুহনী বাজারে ফল ব্যবসায়ী ইছহাক জানান, বাজারে এখন আম ও লিচু বেশি চান ক্রেতারা। আমের থেকেও লিচুবেশি বিক্রি হচ্ছে। লগডাউনে গাড়ী ভাড়া বেশি হওয়ায় অন্যান্য জায়গা থেকে মাল আনতে খরচ হয়েছে বেশি। সব খরচ বাদদিলে খুবই সীমিত লাভ থাকে লিচুতে। এবার লিচুর ফলন কম হওয়ায় চাহিদা খুব বেশিই। ক্রেতাদের চাহিদা যোগান দিতেহিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাজারে ফরমালিনমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারীকমিশনার (ভূমি) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, মূলত সরাসরি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ( BSFA) থেকে এই সমস্তঅভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে কোনো কারখানা বা গোডাউনে ফলে ফরমালিন দেওয়া হচ্ছে এই মর্মে কোনো ইনফরমেশনপাওয়া গেলে আমরা ওই কারখানা বা গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করে থাকি। আর বিভিন্ন জায়গা থেকে ফল আনার সময়ওইসব ফল গুলো চেক করেই আনা হয়।