সোম মল্লিক যশোর প্রতিনিধি : প্রতিদিনই যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় হাসপাতালের করোনা ইউনিট পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জের সাজেদা ফাউন্ডেশন। এজন্য যশোর হাসপাতালের কাছ থেকে কোনো অর্থও নেবে না তারা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিটে (রেড জোন) ৮০ শয্যার বিপরীতে ৭৬ জন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে (ইয়োলো জোন) ১৯ শয্যার বিপরীতে ৪৮ জন ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বর্তমানে একজন চিকিৎসাধীন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, দুই মাস আগে জনবল নিয়োগ ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ হাসপাতালে তিন শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়েছে। ফলে করোনা রোগীদের সামাল দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় হাত বাড়িয়ে দেওয়া সাজেদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠায়। পরে মহাপরিচালক ও পরিচালকের চিঠির ভিত্তিতে (১৫ জুন) সোমবার সাজেদা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চুক্তি সই হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, আগামী দুই মাসের জন্য হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে সাজেদা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। করোনা চিকিৎসাসেবা পরিচালনার জন্য ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ চিকিৎসক, ১০ নার্স, প্যারামেডিকেল ডিপ্লোমাধারী ১২ ব্রাদার এবং ১০ ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী এ হাসপাতালে কাজ করবেন। এ ছাড়া পাঁচটি হাই ফ্লো নাজাল যন্ত্রসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, অক্সিজেন, ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামও সরবরাহ করা হবে বলে চুক্তিতে রয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেল থেকেই তাদের সরঞ্জাম হাসপাতালে আসা শুরু করেছে।
সাজেদা ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য যশোরের রামনগর এলাকার আরআরএফ রিসোর্ট দুই মাসের জন্যে ভাড়া করা হয়েছে বলে জানান যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান।
এ বিষয়ে সাজেদা ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাজেদা হাসপাতালের কোভিড ইউনিট প্রধান (ইনচার্জ) ইবনে নাকিব বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিট পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবল এবং চিকিৎসার অত্যাধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আমরা নারায়ণগঞ্জে ১ হাজার ২২ ও ঢাকার কেরানীগঞ্জে সাজেদা হাসপাতালের মাধ্যমে ১৩০ করোনা রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা করেছি। ঢাকায় এখন করোনা রোগী কম। এ জন্য আমরা সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে যশোরকে বেছে নিয়েছি। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দুই মাস যশোরে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।