নজরুল শাহ্ (ঘাটাইল): টাংগাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের আষাঢ়িয়া চালা হতে ভবানীপুর হয়ে বিখ্যাত কাচামালের বাজার কুতুবপুর পর্যন্ত রাস্তাটি যেনো স্বাধীনতার স্পর্শ পাবেনা কোনদিন! রাস্তাটির করুণ-দশা দীর্ঘ দিনের। শুধু এ রাস্তাটি-ই নয়,হেঙ্গারচালা বাজার হতে পোড়াবাসা খাঁনমোড় হয়ে সুন্দইল দিয়ে উপজেলার সীমান্তবর্তী হাসনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত রাস্তাটিরও খুব বেহাল দশা। ধলাপাড়া ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলের সকল রাস্তাগুলোই যেনো অবহেলার শিকার প্রতিটা সরকারের আমলেই।
ঘাটাইল উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০,৪৭২বর্গ মিটার আয়তন নিয়ে ধলাপাড়া ইউনিয়ন গঠিত।যাহার দুই-তৃতীয়াংশ পাহাড়ি অঞ্চল। অথচ এই বিশাল জনগোষ্ঠীর ভাগ্যন্নোয়নে কোন সরকার-ই সু-দৃষ্টি জ্ঞাপন করেনি। এমন অভিযোগ শিরিরচালা, ভবানীপুর, সুন্দইল, ফকিরটুল, মোথাজুরি ও চকচকিয়া অঞ্চলের সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সকল মহলের।
তবে কেউ কেউ বলছেন,আমানুর রহমান খাঁন (রানা) যদি এমপি থাকতো তাহলে হয়তো আমাদের পাহাড়বাসীর ভাগ্যের কিছু-টা পরিবর্তন হতো।
“আমরা ভাত চাই না, পাকা রাস্তা চাই”-এই শ্লোগান নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে কয়েকবার। কিন্তুু কাজের কাজ কিছুই হয়না। এভাবেই বিরক্ত প্রকাশ করছিলেন ৭১-র বীর মুক্তিযোদ্ধা চকচকিয়া এলাকার মোছলেম উদ্দীন।
উপজেলার আষাঢ়িয়া চালা হতে শিরিরচালা, ভবানীপুর ও ফকিরটুল হয়ে যে কাঁচা রাস্তাটি তা পাঁয়ে হেটে চলার অবস্থাও যেনো নাজুক পর্যায়ে। এই বৃষ্টিতে সাতানি বাঈদে একটি কালভার্ট (পাইপ) ছিলো তাও ভেঙ্গে গিয়ে কৃষি পন্য বহনকারী ভ্যান বা ঘোড়ার গাড়ী চলাচল সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ।এই রাস্তা দিয়ে প্রায় প্রতিদিন-ই কৃষি উৎপাদিত পণ্য (আম,কাঁঠাল,বেগুন,কলা,কচু ইত্যাদি)-টাংগাইল জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচা বাজারের হাট কুতুবপুরে আনা-নেওয়া করা হয়। অথচ এ রাস্তাটি পাঁকাকরণ তো দূরে থাক সঠিকভাবে কাঁচাকরণের কাজও হয়নি কোনদিন। ফকিরটুল এলাকার আব্দুল মজিদ এভাবেই বলছিলেন কথাগুলো।
এ রাস্তাটির ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য (বর্তমান) মোঃ শরিফ হোসেন বলেন, বর্ষার আগে কাবিখা এবং কাবিটা’র অধীনে কিছুটা রাস্তা ভরাটের কাজ করেছি।কিন্তুু বৃষ্টি হলেই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়, আমি কি করবো ভাই?
আমার তো আর রাস্তা পাঁকা করার ক্ষমতা নেই। তবে কালভার্টটি ভেঙ্গে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মানিত চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলবো।
এ ব্যাপারে ১১নং ধলাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজহারুল ইসলাম (মিঠু) ভূইয়া বলেন, আষাঢ়িয়া চালা হতে ভবানীপুর- ফকিরটুল হয়ে যে রাস্তাটি সখিপুর উপজেলার কুতুবপুর বাজারের দিকে গিয়েছে, তা খুব-ই গুরত্ত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। এই রাস্তায় সাতানি বাঈদের কালভার্টটি ভেঙ্গে সাধারন যানবাহন ও মানুষ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে শুনেছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলে খুব দ্রুত একটা ব্যবস্থা করবো।
পাহাড়ি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার দূর্ভোগের কথা জানালে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, LGSP, 1%, ADP/রাজস্ব প্রকল্পের অধীনে রাস্তার ছোট-খাটো কাজগুলো ইউনিয়ন পরিষদ করে থাকেন। চাহিদা পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।
পাহাড়ি এলাকার মানুষের সামগ্রিক দুর্দশা নিয়ে ঘাটাইল আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন বলেন, টাংগাইল জেলার সকল উপজেলা থেকে ঘাটাইল উপজেলা আয়তনে বৃহৎ। তবুও আমি চেষ্টা করছি ঘাটাইলকে মডেল উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। বিশেষ করে উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলকে ঢেলে সাজাতে।