তৌহিদ উদ দৌলা রেজা: বাংলাদেশের প্রাপ্ত বয়ষ্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩% তামাকসেবী আছেন, যাদের মধ্যে পুরুষ ৪৬% এবং নারী ২৫.২%। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে সরকারী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। মঙ্গলবার, সকাল সাড়ে ১১ টায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি এবং দ্যা ইউনিয়নের সমন্বিত উদ্যোগে বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে তামাক নিরসণের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক ওয়েবিনারে আয়োজকরা এ দাবী করেন।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক ডাঃ গোলাম মহিউদ্দিন ফারুকের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন টিসিআরসির প্রেসিডেন্ট ও মাননীয় সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার, মো.শফিকুল ইসলাম হেডস অব প্রোগ্রামস ভাইটাল স্ট্রাটেজিস, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর লিড পলিসি এ্যাডভাইসার মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাষ্টি বোর্ডেও ভাইস-চেয়ারম্যান ডাঃ এস. কাদের পাটোয়ারি, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনিস্টিটিউট ও হসপিটাল পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ কাজী মুশতাক হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মীর আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ, দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেলের সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রহমান।
ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, চিকিৎসা দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তারচেয়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ধূমপায়ীদের ধূপমান থেকে নিবারন করার জন্য রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ জরুরি। তামাকের প্রসারে কোম্পানিগুলো খুবই তৎপর। তবে আশার কথা হল সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক। এ বছর ১৭১ জন সংসদ সদস্য তামাকের কর কাঠামো পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এ ধারাবাহিকতা থাকলে আমরা ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে পারব।
হোসেন আলী খন্দকার বলেন, ধূমাপায়ীদের ধূমপান ছাড়তে সচেতনতার বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তামাকসেবিদের ধূমপান ছাড়তে সরকারী ও বেসরকারী সংগঠন নিয়ে সারাদেশব্যাপী কাজ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সহযোগিতা সব সময় থাকবে। সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা তামাক সেবন থেকে মুক্তি পেতে চান তাদেরকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। ধূমপানে নিরুসাহিত করতে যে সকল আন্তজার্তিক অভিজ্ঞতা রয়েছে তা কাজে লাগতে হবে। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় ভাবে গবেষণা প্রয়োজন।
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, তামাকসেবিদের তামাক ছাড়তে তাদেরকে সহযোগিতার বা নিরুসাহিত করতে সরকারের একটি জাতীয় নীতিমালা করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়নকে কাজে লাগানো যায়। একটি নিদিষ্ট নাম্বারে ফোন দিয়ে মানুষ জানতে পারবে কিভাবে তামাকের আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
উক্ত সভায় সারাদেশ থেকে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দসহ জাতীয় পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।