পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়া ইউনিয়নের দয়ালনগরে ১০৫ নং তালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষকে গোয়ালঘর বানিয়ে দখল করেছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী রাফি উদ্দিন খাজা। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। বিষয়টি জানার পর শুক্রবার সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সবুর আলী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারি সিন্ধান্তেই সারাদেশের ন্যায় বেড়া উপজেলার তালিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখা হয়। বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে স্থানীয় মাসুমদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাফি উদ্দিন খাজা স্কুলের নীচতলায় কয়েকটি কক্ষে গরু, ছাগল ও ভেড়া রাখার গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। গোয়াল ঘরের আড়ালে তিনি নানা অসামাজিক কর্মকান্ডও পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ উঠে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, করোনার কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় বেশকিছুদিন স্কুলের খোঁজখবর জানিনা। কিছুদিন আগে বন্যার কারনে শুনেছিলাম স্থানীয়রা শ্রেণিকক্ষে গরু, ছাগল ও ভেড়া রেখেছে। আমি না রাখতে নিষেধ করলেও তারা শুনেনি। বিদ্যালয়ের সভাপতি, স্থানীয় মেম্বার, স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে রাফি উদ্দিন খাজা শুধু স্কুলের কক্ষ দখল করে গোয়ালঘরই বানাননি। সেই সাথে তিনি দেহব্যবসা, মাদক বিক্রি, জুয়া খেলা, মাদকের আসর, চাঁদাবাজি ও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনসহ নানা ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও অন্যায় কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তার কাছে স্থানীয়রা এক ধরণের জিম্মি হয়ে পড়েছে। মাসুমদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল হক জানান, স্কুল ঘর দখল করে গোয়ালঘর বানিয়ে তিনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সুপারিশ করা হবে।
বেড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বেশ কিছুদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই সুযোগ তিনি নিয়েছেন। তবে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সচেতন হওয়ার দরকার ছিল। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর বেড়া নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সবুর আলী জানান, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশে বিষয়টি নজরে আসে। শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা মেলায় বিদ্যালয়ের নীচতলা থেকে গোয়ালঘর অপসারণ করা হয়েছে।