আল এনায়েত করিম রনি, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে কোরবানির পশুর হাটে বিধি বর্হিভূত ভাবে খাজনাসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে নির্ধারিত খাজনার চেয়ে চার গুন বেশি পরিমান টাকা আদায় করায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন আপেল মাহমুদ নামে এক ব্যাক্তি।
অভিযোগকারী ও ভূক্তভোগী পশু ক্রেতা-বিক্রেতা সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পশুর হাটের ইজারাদার বিধি বর্হিভূতভাবে হাটে আসা পশুর ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে নির্ধারিত খাজনার চেয়ে দুই পক্ষের (ক্রেতা ও বিক্রেতা) কাছ থেকে চার গুন বেশি অর্থ আদায় করছেন। নিয়ম অনুযায়ী হাটে আসা গরু, মহিষ, ঘোড়া প্রতিটি ক্রেতার কাছে ২শ ২৫ টাকা ও ছাগল, ভেড়া প্রতিটি ক্রেতার কাছ থেকে ১শ টাকা হারে আদায় করার কথা। সেখানে বিক্রেতার কাছ থেকে কোন খাজনা আদায় করার নিয়ম নেই। অথচ ইজারাদার উভয় পক্ষের কাছ থেকে খাজনা আদায় করছেন। এছাড়া খাজনা আদায় রশিদ গুলোতে খাজনা আদায়ের টাকার পরিমানের কথা উল্লেখ নেই। সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার উলিপুরে পশুর হাট বসে। এদিকে সরকার লকডাউন শিথিল করায় মহামারী করোনা কালে পশুর হাটে স্বাস্থ্য বিধি মানার কোন বালাই নেই।
সোমবার (১৫ জুলাই) বিকাল পাঁচটায় সরেজমিন উলিপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে বসা পশুর হাটে গেলে কথা হয় ক্রেতা শহিদুল, আব্দুর রফিক, হোসেন আলী, ফজলু মিয়া, মকবুল হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও বিক্রেতা মোকছেদ, আলতাফ হোসেন, খজির, আমিনুল, নুর আলমসহ অনেকের সাথে। তারা জানান, গরু ও মহিষ ক্রয় করলে ইজারাদারের লোক ৫শ টাকা করে খাজনা আদায় করছেন। এছাড়া বিক্রেতার কাছ থেকে ৩শ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, ছাগল ও ভেড়ার হাটে ক্রেতার কাছ থেকে ৩শ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২শ টাকা আদায় হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী শুধু মাত্র ক্রেতার কাছ থেকে খাজনা আদায় করার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, পৌরসভার নির্ধারিত খাজনা থেকে চারগুন বেশি অর্থ আদায় করা হলেও খাজনা রশিদে তা লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে না।
এদিকে ইজারাদার কর্তৃক খাজনাসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিকার চেয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কার্যালয়ে আপেল মাহমুদ নামে এক ব্যাক্তি অভিযোগ করেছেন।
উলিপুর হাটের ইজারাদার কয়ছার আলীর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উলিপুর পৌরসভার মেয়র মামুন সরকার মিঠু বলেন, পশুর হাটে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। কেউ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে তা বে-আইনী হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি আমি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ইজারাদার ও পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। ইজারাদার যদি অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন তা বিধি বর্হিভূত হবে। অপর প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, হাটে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়টি ইজারাদারকে নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।