সোম মল্লিক যশোর প্রতিনিধি : লকডাউন কেটে যাওয়ার পর সবজি, মাছ-মাংসের দাম কমতে পারে এমন আশায় গুড়ে বালি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা সাধারণ। এতে নাভিশ্বাস হয়ে পড়েছে তারা।
সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে দাম না বাড়লেও নওয়াপাড়াসহ আশপাশের বাজারগুলোতে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। সেই সঙ্গে সব ধরনের মাছের দামও বেশ চড়া। বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। এই সবজিটি কিনতে ক্রেতাদের কেজিতে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দিতে হচ্ছে।
এছাড়া কেজি একশ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়ার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো। আগের সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এর সঙ্গে বেগুন, ঝিঙে, করলা, বরবটির দামও বেশ চড়া। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে সবগুলোরই দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। বেগুন, ঝিঙে এবং করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটির কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আগের মতো ঢ্যাঁড়স এবং পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
সবজির দামের বিষয়ে নওয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জানান, আমাদের হিসেবে সবজির দাম যে হারে বাড়ার কথা, সে হারে বাড়েনি। কারণ এবার বৃষ্টিতে প্রচুর সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। আবার করোনার কারণে সবজির সরবরাহ কম। সে হিসেবে সবজির দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় কথা, তবে বাড়েনি। ঈদের পর সবজির দাম বাড়বে বলে আমাদের ধারণা। ব্যবসায়ীরা বলেন, আড়তে এখন সবজির দাম অনেক। বেশি দামে কিনে আনার কারণে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। শীতের সবজি বাজারে আসার আগে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। বরং ঈদের পর সবজির দাম আরও বাড়তে পারে। এদিকে তিন সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া আদা বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। আর দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তেলাপিয়া মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, রুই মাছ ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামও প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। মাংসের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আগের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। লেয়ার মুরগি ২৩০-২৪০ টাকা আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ ৫০ থেকে ৮শ’ টাকা। এর সঙ্গে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে আলু এবং ডিমের।
আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। আর ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। রামপুরার বাজার থেকে একজন সবজি ও মাছ ক্রেতা বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম চড়া। আমাদের কিছু করার নেই। সবকিছু মুখ বন্ধ করে সহ্য করে নিতে হবে। এই করোনার মধ্যে সাধারণ মানুষ কী পরিমাণ কষ্টে আছে বলে বোঝানো যাবে না।