রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের ভ্রমণ ও পর্যটন খাতে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে। বন্ধ হয়ে গেছে রাঙ্গামাটির জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলো। দেশের সবচেয়ে বড় জেলা পার্বত্য রাঙ্গামাটির হোটেল-মোটেল গুলোতে সরকারি প্রজ্ঞাপনের আদেশে বন্ধ করে দেওয়া স্পটগুলো বর্তমানে দীর্ঘদিন ধরে পর্যটকের জনশূন্য।
ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণের উপর কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রতিদিন অব্যাহত রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। বন্ধ হয়ে গেছে দামিদামি সব ধরনের হোটেল-মোটেল। একইসাথে রাঙ্গামাটির পর্যটন খাতে নেমে এসেছে বিশাল ধ্বস।
করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করতে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সকল পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পর্যটকদের আগমন নিরুৎসাহিত করা হল।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মো: মিজানুর রহমান বলেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত রাঙ্গামাটির সকল পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নির্দেশনা যদি কেউ অমান্য করে, তার বিরুদ্ধে জেল জরিমানা ও আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে পর্যটন বন্ধ থাকায় মহামারি করোনা তাদের জীবনের অনেক হিসাবই পাল্টে দিয়েছে। করোনা ভাইরাসের ছোবলে সারা দেশের সঙ্গে আতঙ্কে রাঙ্গামাটির মানুষও। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছাড়িয়ে মানুষ এখন অনেকটা রীতিমতো দিশেহারা। এমন পরিস্থিতি মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে রাঙ্গামাটির পর্যটন খাতের ওপর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এরই মধ্যে হঠাৎ ফাঁকা হয়ে গেছে, সরকারি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সসহ জেলার সবক’টি পর্যটন স্পট ও আবাসিক হোটেল-মোটেল। এসব পর্যটন স্পট ও হোটেল-মোটেল এখন জনশূন্য। প্রভাব পড়েছে রেস্টুরেন্ট এবং খাবার হোটেলেও। বেকার হয়ে পড়েছেন অনেকে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের আদেশ অনুযায়ী অধিক জনসমাগম এবং পর্যটন এলাকায় ভ্রমণে বিরত থাকার নির্দেশনার পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি সরকারি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটন এলাকাটি জনশূন্য একদম নাই বললে চলে। ফাঁকা দাঁড়িয়ে রয়েছে মনোরম ঝুলন্ত ব্রীজ। কর্মচারীরা ছাড়া আশপাশে কোথাও লোকজনের ঘোরাঘুরি নেই। কর্মচারীরা জানান, এমনিতে লোকজন আসছে না। তাছাড়া সরকারের নির্দেশনায় পর্যটন এলাকায় প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়েছে।
সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্সে ছাড়াও রাঙ্গামাটি শহরের পর্যটনস্পটে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, জেলা পুলিশের পলওয়েল পার্ক, সুখীনীলগঞ্জের মিনি চিড়িয়াখানা, রাঙ্গামাটি রিজিয়নের আরণ্যক হলিডে রিসোর্ট, শুভলং ঝর্না, কাপ্তাই এবং বাঘাইছড়ির সাজেকের পর্যটন এলাকাসহ সব পর্যটনগুলোতে এখন জনশূন্যতা। ফাঁকা হয়ে গেছে ওই সব পর্যটন এলাকা, বলতে গেলে পাহাড়ে করোনায় পর্যটন শিল্পের উপর বিস্তর প্রভাব পড়েছে। অনেকে সরকারি প্রণোদনার জন্য অপেক্ষায় আছেন।