অভয়নগরের সেই অবৈধ কাঠ-কয়লার চুল্লি উচ্ছেদ : জনমনে স্বস্তি

যশোর প্রতিনিধি : অবশেষে যশোরের অভয়নগরের সেই অবৈধ কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর চুল্লি উচ্ছেদ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এতে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এনিয়ে বজ্রকন্ঠ অনলাইন এছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকা একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ করা হলেও অবশেষে উচ্ছেদ করলো প্রশাসন। জানা যায়, অভয়নগরে বহুল প্রচারিত অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানার চুল্লি ভেঙ্গে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের ধূলগ্রাম ও সোনাতলা অঞ্চলের চৌষট্টি (৬৪) কাঠ কয়লার চুল্লি ভেঙ্গে দেয় খুলনা বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট ও উপপরিচালক মাশরূবা ফেরদৌস এর নেতৃত্বে। অবৈধভাবে তৈরি কাঠকয়লার চুল্লি ভেঙ্গে ফেলায় স্থানীয় জনগনের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের।

তথ্যমতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের অগোচরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছিল স্থানীয় কিছু প্রভাশালীরা। ইতিমধ্যে কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি প্রশাসনের মাধ্যমে চুল্লিগুলো ভেঙ্গেও দেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কোন এক অদৃশ্য শক্তি নিয়ে আবার নতুন উদ্যোমে শুরু করেন এই গুরুত্বর অপরাধ মূলক কাজ।

স্থানীয় ভূক্তভোগিরা জানান, এই চুল্লির কারনে ঘন বসতিপূর্ণ এ অঞ্চলের সবুজ গাছের পালাগুলো ধূসরে পরিনত হতে শুরু করেছে। বিস্তীর্ণ সবুজ ক্ষেতের পাতা পুড়ে গেছে। গাছের ডাল পাতা পুড়ে গেছে ধোয়ার বিষাক্ত বাতাসে। মারা যাচ্ছে নদীর পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ।

যার ফলে একদিকে বন উজাড় হচ্ছে অপরদিকে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। স্থানীয় শত শত ব্যক্তি ইতিমধ্যে শ্বাস কষ্টে আক্রান্ত হয়েছে। বৃদ্ধ, শিশু ও পরিবেশ সবই ভয়াবহ সংকটের মুখে। প্রশাসনের নিরবতায় প্রভাবশালীরা থোড়ায় কেয়ার করছে না অসহায় মানুষের এই আহাজারি। অবশেষে দৈনিক নওয়াপাড়ায় কয়েকবার শিরোনাম হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সোমবার সকালে স্থানীয় ক্যাম্পের পুলিশের সহযোগিতায় ৬৪ চুল্লি ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তরে নির্বাহী ম্যাজিট্রেট।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মো. শরিফুল ইসলাম, অভয়নগর থানার এসআই আকরাম হোসেন, নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা খান এহসান উল আলম এবং আমতলা ও সোনাতলা পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যবৃন্দ প্রমুখ। অবৈধ চুল্লি ভাঙ্গায় স্থানীয় জনগনের মনে স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে।

এবিষয়ে নবম শ্রেনীর ছাত্র আকাশ বলেন, কয়লা তৈরির এই চুল্লি থেকে বিষাক্ত ধোয়ার কারনে আমরা বাড়িতে থাকতে পারিনে।তবে এই চুল্লি ভেঙ্গে ফেলাই আমরা খুশি হয়েছি। ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নাজিম মোল্লা জানান,এই অবৈধ কয়লা তৈরির চুল্লি ভেঙ্গে ফেলায় জনমনে স্বস্তি পেয়েছে।

কিন্তু প্রশাসনের সব সময় নজরদারিতে রাখতে হবে । আবার যেন নতুন করে এই অপকর্ম শুরু না করে। দীর্ঘদিন ধরে কাঠ পুড়িয়ে অবৈধভাবে কয়লা তৈরির বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর সরকারের একটা অংশ। বিষয়টি তাদের নজরে আসায় ব্যবস্থা নিয়েছে।

এবিষয়ে খুলনা বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট ও উপপরিচালক মাশরূবা ফেরদৌস বলেন, প্রশাসনের অগোচরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির এই চুল্লি থেকে ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি করছে। ফলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের মাধ্যমে এই চুল্লি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে এধরনের অভিযান অব্যহত থাকবে।

অভয়নগরের সেই অবৈধ কাঠ-কয়লার চুল্লি উচ্ছেদ
Comments (0)
Add Comment