পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার কাজিরহাট থেকে আরিচাঘাট নৌরুটে ৩ টি ফেরি চলাচল করলেও পারাপারের অপেক্ষায় শতশত যানবাহনসহ সাধারণ মানুষ। এই নৌরুটে ৪ টি ফেরি থাকলেও আকষ্মিকভাবে ২ টি ফেরি নিয়ে যাওয়া হয় শিমুলিয়া ঘাটে। ২ টি ফেরিতে পারাপারে নাকাল অবস্থায় সোমবার একটি ফেরি বহরে সংযুক্ত হয়েছে। তবুও যানবাহনের দীর্ঘ লাইন আর মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
পাবনার কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন তুলে নেয়ার পর পরিবহণের পাশাপাশি মানুষের বাড়তি চাপ দেখা দিয়েছে। কাজিরহাট ঘাট থেকে আরিচা পার হতে যানবাহনগুলোকে কমপক্ষে ৮/১০ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরেও প্রায় তিন শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, লকডাউন তুলে নেয়ার পর থেকে বাড়িত চাপের মধ্যেই এই রুট থেকে ২ টি ফেরি নিয়ে যাওয়া হয়েছে শিমুলিয়া ঘাটে। এই রুটের দূর্ভোগের বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসার পরপরই কর্তৃপক্ষ একটি ফেরি বহরে যুক্ত করে দিয়েছেন। তিনি দাবী করেন, আরও কয়েকটি ফেরি সংযুক্ত করা গেলে অবশ্যই এই যানজট অনেকাংশে কমে আসবে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, গত ১৩ আগষ্ট ভোরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজিরহাট ঘাট থেকে সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া নামের দুটি ফেরি শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ নিয়ে যায়। এরপর গোলাম মওলা ও কপতি নামের দুটি ফেরি চলাচল করছিল। ১৬ আগষ্ট বিকেলে কলমিলতা নামে একটি ফেরি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। অনেকে গাড়ীর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সময়মত পণ্য ডেলিভারি দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পরিবহন চালকরা। উৎকণ্ঠায় ব্যবসায়ী মহল। যানজটের কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও চরম বিব্রতকর অবস্থায় আছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী উজ্জল হোসেন জানান, সকালে ঘাট থেকে কমপক্ষে আড়াই কিলোমিটার জুড়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে যানবাহন নদীপারাপারের অপেক্ষায়। কেউ কেউ একদিন অতিবাহিত করলেও ফেরিতে উঠতে পারেননি। নতুন করে ঘাটটি চালু করা হলেও সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এ অঞ্চলের মানুষ।
রূপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জ্বল বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুতে যানজট কমানোর জন্যই মুলত এখানে ফেরিঘাট স্থাপন করা হয়েছে। শুরুর দিকে নতুন ফেরি দিলেও বর্তমানে পুরাতন ফেরি দিয়ে চলছে এই ঘাট। ফেরি বৃদ্ধি করাসহ এই রূটে নতুন ফেরি সংযোজনের দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী, সরকার ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। এখন এই উদ্যোগের সাথে সেবার মানটা বৃদ্ধি করা জরুরী। এই ঘাটে ফেরি সংখ্যা বাড়ানো এবং নতুন ফেরি সংযুক্ত করা হলে উত্তরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ সহজ থেকে আরও সহজ হবে। সেই সাথে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর চাপ অনেকাংশে কমে আসবে। সাধারণ মানুষ দিনের কাজ শেষে দিনেই বাড়ি ফিরতে পারবে।