আল এনায়েত করিম রনি, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে ব্রহ্মপূত্র, তিস্তা, ধরলাসহ কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার সকালে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। দুপুর ৩টার দিকে ১০ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে এখন ৮ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমা-বাড়ার ফলে ধরলা অববাহিকায় প্রায় সহস্রাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর রোপা আমন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সোমবার সকালে তিস্তা নদীর পানি ব্রীজ পয়েন্টে ১ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপূত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ২ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে সোমবার সকাল পর্যন্ত সারা জেলায় ৩ হাজার ২শ’ হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। অন্যান্য নদ-নদীগুলোর নীচু এলাকায় রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, আমার এলাকায় বাড়িঘরে পানি না উঠলেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় শতাধিক হেক্টর আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর জামাল জানান, ধরলা অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলে শেষ মূহুর্তে যারা রোপা আমন লাগিয়েছে সেগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
সদরের হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উমর ফারুক জানান, গত দুইদিনে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডে প্রায় ৬শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। এছাড়াও নীচু জমির রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, সদরের বন্যা কবলিতদের তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। বেশ কিছু এলাকার বাড়িঘর তলিয়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। এছাড়াও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। তথ্য পেলে গোটা চিত্রটা জানা যাবে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, চলতি বছরে ব্রহ্মপূত্র, তিস্তা, ধরলাসহ বেশ কিছু নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে প্রায় ৩ হাজার ২শ’ হেক্টর রোপা আমন ধান নিমজ্জিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।