সত্যেন্দ্রনাথ, রায়, নীলফামারী প্রতিনিধি : হতাশা, হাহাকার, আর্তনাত, একাকিত্ব, প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধকতা, সবই জেন গ্রাস করেছে কামালের পরিবাড়ে। বাবা মায়ের কোলে চড়ে দীর্ঘ ৯ টি বছর ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহনের জন্য যাওয়া আসা করছে শারীরিক প্রতিবন্ধী কামাল(১৭) সে ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম বোড়াগাড়ী সবুজপাড়া গ্রামের আফছার আলী ও করিমুন বেগম দম্পতির বড় ছেলে। বাড়ীর এক কিলোমিটার দুরেই পশ্চিম বোড়াগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সে নবম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা জানান, ছেলে জন্মের পর ভালোই ছিল।
দুই বছর পর হঠাৎ একদিন কামালের শরীরে জ্বর আসে। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করি কিন্তু জ¦র কমেনা।ডাক্তার রংপুরে চিকিৎসার জন্য পাঠালে রংপুর ব্রাক হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু তার জ্বর কমলেও হতে থাকে হাত পা বাকাঁ। ব্রাকে ৩ বছর ধরে চিকিৎসা করালেও হাত ও পায়ের হাঁড়গুলো আজ ও হয়নি সোজা। ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে ভারতে চিকিৎসা করাতে বল্লেও, ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি, সামর্থের অভাবে। ছেলে আমার প্রতিবন্ধীই হয়ে গেল।পিতা হিসাবে আমি অপদার্থ সন্তান স্কুলে যাওয়ার জন্য ভালমানের হুইল চেয়ারের আবদার করে বার বার, কিনে দিতে পারনি।
কামাল স্কুলে পড়ে, আমরা দু’জন মানুষ ( স্বামী-স্ত্রী) যেদিন যে সময় পাই, কোলে করে স্কুলে আনা নেওয়া করি। এখন ছেলে বড় হয়েছে, আমাদের দুঃখ কষ্টগুলো বুঝতে পারে। তাই সে নিজেই হুইল চেয়ারে বসে স্কুল যেতে চায়। হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ না থাকায়.একটি হুইল চেয়ারের জন্যে ছেলেকে কোলে নিয়ে সরকারী দপ্তরসহ জন প্রতিনিধিদের কাছে যাচ্ছি। যদি কোন প্রতিষ্ঠান বা হৃদয়বান ব্যক্তি সহযোগীতা হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে এক প্রতিবন্ধি সন্তানের পিতা হিসাবে তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।চেয়ারে বসে একাই স্কুলে যেতে পারবে।
কামাল বলেন মা বাবার দিন মজুরীতেই চলে সংসার,তারা আমাকে স্কুলে নিয়ে গেলে কাজ করবে কে,উপার্যন ছারা কিভাবে চলবে আমাদের পরিবার। কোলে চড়ে বিদ্যালয়ে আর যেতে চাই না। আমার আত্মবিশ্বাস হাতে চালানো একটি হুইল চেয়ার হলেই, নিজেই চালিয়ে বিদ্যালয়সহ নানা যায়গায় চলাফেরা করতে পারবো। আমার ও আমাদের নিরুপায় মানুষ গুলোর দঃখ কস্টের কথা একটু ভেবে কারো যদি সহানুভুতি হয় তাহলেই বাচবো। দিন মজুর বাবা মা ইতিপূর্বেই আমার চিকিৎসার জন্য সহায় সম্ভল শেষ করে ফেলেছে।এখন কোনভাবে সবার দোয়ায় বেঁচে আছি।