পাবনা প্রতিনিধি : উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে পাবনা জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর পানি কমা বাড়া শুরু করেছে। শনিবার সকালের তথ্যমতে নগরবাড়ি যমুনা নদীর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও পদ্মা নদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার ও বড়াল নদীর বড়াল ব্রিজ পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা সদর, ঈশ^রদী, বেড়াসহ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানি প্রবেশ করায় সবজি ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, শনিবার সকালের পানি পরিমাপে যুমনা নদীতে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকদিনের তুলনায় পদ্মা, চলনবিল, বড়াল, গুমানি, চিকনাইসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে।
জানা যায়, পদ্মা ও যমুনার তীরবর্তী নিচু এলাকাতে পানি প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে যাচ্ছে উঠতি নানা ধরণের শবজি ও ফসলের ক্ষেত। পানি বন্দি হয়ে পড়ছে তীরবর্তী জনসাধারণ। অনেকেই ইতোমধ্যে বাড়িঘর সড়ানো শুরু করেছে। নদী ভাঙ্গন ও পানি বন্দিদের মধ্যে উৎকণ্ঠা আর দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন। ঈশ^রদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকামালপুর, বিলকাদা, চরকুড়লিয়া, বেড়া অঞ্চলের নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন ইউনিয়নের পূর্বশ্রীকণ্ঠদিয়া, চরশাফুল্লা, খয়েরবাগান বাজারসহ চর এলাকা, সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের খলিলপুর, চরখলিলপুর এবং কালিকাপুর এলাকা, পাবনা সদরের আশুতোষপুর, বলরামপুর ও রানীনগর ভাঙ্গন এবং পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে।
নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলায় প্রাং ৫ শতাধিক হেক্টর জমির নানা ফসল ও সবজি তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে শীত সামনে নিয়ে নানা সবজির ক্ষেত, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, করলাসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি এবং আখ ও কলার ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পাবনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যা-পানি বৃদ্ধি বা ভাঙ্গনের চিত্রটা এখনও ত্রাণ দেওয়ার মতো নয়। তবে সরকারি ত্রাণ সহায়তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বসত ঘরবাড়ি হারিয়ে যারা অন্যত্র আশ্রয় নেবেন তখন বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দেয়া হবে। বরাদ্দ সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেয়া যাবে।