বান্দরবান থেকে ঘুরে এসে মাহফুজ আলম, নিজস্ব প্রতিবেদক : বান্দরবানের রুমা উপজেলায় রাস্তার আগে ব্রিজ তৈরি করে বিতর্কের জন্ম দেওয়া এলজিইডির সেই প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন ও তদন্ত করেছেন যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) এবং চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মিজানুর রহমান। এসময় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গনমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার (৫সেপ্টেম্বর) সকালে তিন সদস্যের টিম রুমা মুখ-গ্যালেঙ্গা ইউপি অফিস রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় তদন্ত টিমের সদস্যরা অপেক্ষমান এলাকার কারবারীসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে ব্রিজ ও সড়কের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেন।
পরে তদন্তটিম রুমা উপজেলা পরিষদ ভবনের ইউএনও কার্যালয়ে দ্বিতীয় দফায় কথা বলেন এলাকার মানুষের সঙ্গে। এসময় উপজেলা প্রশাসন, এলজিইডির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত টিমের প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, “আপনাদের-আমাদের চাপে পড়েই টেন্ডারের আগেই রাস্তার কাজটি শুরু করা হয়েছে”।
তিনি আরো বলেন- আমি যেমন খালি চোখে দেখেছি, ব্রিজ পাহাড়ের ভিতর ঢুকে গেছে। ঠিক তেমনি আপনারাও দেখেছেন। তবে সেটি আমাদের বিবেকের চোখে দেখতে হবে। বুয়েট-চুয়েট থেকে পাশ করা মেধাবী লোকেরা এই কাজটি কেন করলেন?
সাংবাদিক এবং এলাকার সচেতন মানুষকে টেন্ডার কোড, ডিপিপির কোড, অফিসে যোগাযোগ করা দরকার ছিল। এগুলো যাচাই করলেই ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ষ্পষ্ট হতো। আর সেটি তদন্তের মাধ্যমেই এখন করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০০৬ সালে ১৭কি:মি: এই রাস্তার আইডি দিয়ে এলজিইডির ৩০০৩ গেজেট প্রকাশ হয়। আর ২০১৭ সালে আরেকটি গেজেটে একই সড়কটি ২২কি:মি করা হয়। বর্তমানে ব্রিজের পর ১২শ মিটার এপ্রোচ রাস্তার তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন চলমান সড়ক নির্মীত হলে দুই ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
উল্লেখ্য, “রাস্তা ছাড়াই পাহাড়ে চার কোটি টাকার সেতু” শীর্ষক সংবাদ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশের পর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ২৪ আগস্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়। গঠিত কমিটিতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক এবং বান্দরবান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফর রহমান ও রাঙ্গামাটি অঞ্চলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে সদস্য করা হয়। তদন্তকালে রুমা উপজেলা চেয়ারম্যার উহ্লাচিং মার্মা, বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান, রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইয়ামিন হোসেনসহ নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।