যশোর প্রতিনিধি : যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিন প্রতিক্ষার পর স্বপ্নের ভৈরব সেতু গত ২২ নভেম্বর ২০২০ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের পর থেকে জনগনের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়। জনগনের জন্য উন্মুক্ত সেতুটি এক বছরপূর্ণ না হতেই ভৈরব সেতুর অভিমুখের সড়কের দুই পাশের গাইডওয়ালের এক পাশের ব্লক ধ্বসে গেছে আর অপর পাশ যেকোন সময় ধ্বসে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এতে আতঙ্কিত হয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে সেতু সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।
অভয়নগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৪টি ইউনিয়ন ভৈরব নদের এপার ও ৪টি ইউনিয়ন নদের ওপার। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নকে এক সাথে সংযুক্ত করতে নির্মিত হয় ভৈরব সেতু। সেই ভৈরব সেতুর সুবিধা এ অঞ্চলের মানুষ এক বছর ভোগ করতে না করতেই ভৈরব সেতুর অভিমুখের সড়কে দেখা দিয়েছে ধ্বস। যে কারনে এ অঞ্চলের মানুষের আশা নিরাশায় পরিণত হতে চলেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব সেতুর শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দেয়াপাড়া গ্রামের অংশে সড়কের গাইড ওয়াল ধ্বসে পড়েছে। এছাড়া গাইড ওয়ালের শুরু থেকে ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের দুই পার্শ্বেই দীর্ঘ ফাটল দেখা দিয়েছে। ভৈরব সেতু সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী বলেন, যেন তেন ভাবে গাইডওয়াল স্থাপন করায় এবং ঠিকমতো পুডিং না দেয়ায় গাইডওয়ালের এ বেহাল দশা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসী এসকল অভিযোগ সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের প্রতিনিধিদের অবগত করলেও সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্ণপাত করেনি। এছাড়া তিনি আশংকা করেন যেকোন সময় পুরো গাইডওয়াল ধ্বসে পড়ে সেতুটি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। সেই সাথে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। একই অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
তারা বলেন, ব্রিজে অতিরিক্ত লোডের ট্রাক যাওয়ার কারনেও এমনটি ঘটতে পারে। তবে গাইড ওয়াল নির্মাণের সময় কাঁদাবালি ব্যবহার ও যেনতন ভাবে তড়িঘড়ি করে ব্লক বসানোর অভিযোগ শুরুতেই স্থানীয়রা করেছিলেন বলে তারা দাবি করেন।
এ ব্যাপারে এলজিইডি এর অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু বলেন, গাইড ওয়াল ধবসে যাওয়ার খবরে গত বৃহস্পতিবার এলজিইডির যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আনিসুজ্জামান ও খুলনাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রতন কুমার দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঢাকা থেকে ডিজাইনার চাওয়া হয়েছে। ডিজাইনার এনে নতুন করে প্রোপারলি ডিজাইন করে গাইডওয়াল স্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে এলজিইডি এর যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, গাইডওয়াল ধ্বসে পড়া ও ফাটল দেখেছি। এলজিইডি এর প্রধান কার্যালয়ের ডিজাইন সেলে ডিজাইনার চাওয়া হয়েছে।
ডিজাইনার এলে নতুন করে ডিজাইন করিয়ে গাইডওয়াল স্থাপন করা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, গাইডওয়ালটিতে দুইটি স্লোব থাকার দরকার ছিলো সেটা না থাকায় গাইডওয়ালটি বেশি খাড়া হয়ে যাওয়ায় ফাটল দেখা দিতে পারে এবং ধ্বসে পড়তে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভয়নগরবাসী দ্রুত ভৈরব সেতুর সৃষ্ট সমস্যার সমাধানসহ অনতি বিলম্বে সেতুর অভিমুখে সড়কের ২ পাশের ধ্বসে যাওয়া ব্লক পুণঃস্থাপন ও গাইডওয়াল সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন।