মাহফুজ আলম, কাপ্তাই থেকে : কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কুকিমারা পাড়ার নব্বইউর্ধো নারী আম্রামাং মারমা। যিনি মারমা ভাষার একজন লোকগানের (মারমা ভাষায়, কাপিয়া) গীতিকার, সুরকার এবং শিল্পী। এছাড়া তিনি মারমা ভাষার গল্পকার (মারমা ভাষায়, ওয়াইথুউ)। মারমা সম্প্রদায়ের প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্যকে যিনি কথা আর সুরের সংমিশ্রণে এবং গল্পে গল্পে তুলে ধরে আসছে বিগত ৮০ বছরের অধিক সময় ধরে। নিমিষেই তিনি মারমা লোকগীতি রচনা ও সুর করে তা নিজ কন্ঠে গাইতে পারেন। মারমা সংস্কৃতির ধারক বাহক হিসেবে তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে মারমা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে আসছেন। প্রায় নয়শও’র বেশি লোকগীতি তিনি রচনা ও সুর করেছেন। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে বর্তমানে তার রচিত অনেক গান বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
সম্প্রতি এ ব্যাপারে সংবাদ পেয়ে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের কুকিমারা পাড়ায় পৌছে তার সাথে আলাপকালে তিনি জানায়, সেই কিশোর বয়স থেকে মারমা লোকগীতি এবং লোকগল্প লিখে চর্চা করে আসছিলেন। তিনি আরো বলেন অনেক গানের সুরও করেছি এবং আমাদের মারমা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন উৎসবে এসব গান পরিবেশন করেছি। এখন বাধ্যক্ষ জনিত শরীর অসুস্থ, তাই আর লিখার বা গাইবার শক্তি নেই। তিনি তার গান সংরক্ষণের জন্য পরবর্তী প্রজন্মের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অংচাপ্রু মারমা জানান, তিনি এই এলাকার প্রবীন একজন মারমা গানের গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। তার লেখা অজস্র গান পার্বত্য মানুষের মুখে মুখে। তিনি ভালো গাইতে পারেন। তবে তার গান গুলো লিখিত আকারে ফাইল বন্দি নেই।
বর্তমানে গ্রামের অনেক শিল্পী তার গানগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন।মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসস) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম সম্পাদক মংসুইপ্রু মারমা জানান, মারমা সমাজের জন্য তিনি একজন অনুস্মরণীয়। তার গান যদি সংরক্ষণ করা যায় তাহলে মারমা সংস্কৃতি সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।