পাবনা প্রতিনিধি : তৃতীয় বিয়ের অনুমতি নিতে প্রথম স্ত্রী ও তার আত্মীয় স্বজনের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে রক্তাক্ত যখম করেছে পাবনা জিসিআই স্কুলের শরীর চর্চার শিক্ষক ইসমাইল হোসেন খান (৪৩)। তিনি জেলার আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া গ্রামের আশরাফ আলী খানের ছেলে।
ইসমাইল হোসেনের প্রথম স্ত্রী পাবনার মাহমুদপুর মাদ্রাসার শিক্ষক হোসনে আরা খাতুন জানান, ২০০০ সালে পরিবারের সম্মতিক্রমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ইসমাইল হোসেন নানা অজুহাতে তার উপর অত্যাচার করতে থাকে। অত্যাচার সহ্য করেই সংসার করতে থাকেন হোসনে আরা খাতুন। ২০০৪ সালে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
এর মাঝে বিভিন্ন সময় ইসমাইল হোসেন বিভিন্ন মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং একটি মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকা ছাড়েন ইসমাইল। বেশ কিছু দিন গা-ঢাকা দিয়ে থেকে ২০১২ সালের ৫ মে রেহানা আক্তার পলি নামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে বিয়ে করেন। সেখানে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
সেখানেও ২য় স্ত্রী রেহানা আক্তার পলির উপর অত্যাচার শুরু করলে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে পলির সাথে ইসমাইলের সংসার ভেঙে যায়। বর্তমানে তৃতীয় বিয়ের স্বপ্নে বিভোর ইসমাইল হোসেন। তিনি আরেকটি বিয়ের জন্য সব ঠিকঠাক করে ফেলেন কিন্তু বিয়ের দিন প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না থাকায় বিয়ে ভেঙে দেন কন্যা পক্ষের অভিভাকেরা। এ নিয়ে চরম ক্ষিপ্ত ইসমাইল হোসেন প্রথম স্ত্রী হোসনে আরাকে দোষারোপ করেন এবং আবারও শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন।
এদিকে প্রথম স্ত্রীকে তালাকের ভয় দেখিয়ে তৃতীয় বিয়ের অনুমতি পত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার জোর চেষ্টা করেন ইসমাইল। কিন্ত প্রথম স্ত্রী হোসনে আরা তাতে সম্মতি না দিলে তাকে কৌশলে মাজপাড়া ডেকে নিয়ে যান ইসমাইল। গত রোববার (১৭ অক্টোবর) ইসমাইলের বাড়িতে আত্মীয় স্বজনসহ যান প্রথম স্ত্রী হোসনে আরা খাতুন।
বাড়িতে পৌছানোর পর থেকেই তার উপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত ইসমাইল তার প্রথম স্ত্রীর সাথে থাকা আত্মীয় স্বজনসহ প্রায় ৬ জনকে লোহার রড, বাঁশ, জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে জোর করে তৃতীয় বিয়ের অনুমতি পত্রে স্বাক্ষর নেন এবং প্রাণ নাশের হুমকি দেন। এসময় ইসমাইলের বড় ভাই মধু ও ভাতিজারা ইসমাইলকে সহযোগীতা করেন বলে জানান হোসনে আরা। বর্তমানে প্রাণ নাশের হুমকির মধ্যে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সঠিক বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন হোসনে আরা খাতুন।