পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার সুজানগর উপজেলার রানীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যোগ দেয়া একটি গাড়ীতে তল্লাসী চালিয়ে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে গাড়ীর চালককে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার রানীনগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। জব্দকৃত অস্ত্রের মধ্যে একটি লাইসেন্সকৃত, অপরটি অবৈধ।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জেলার সুজানগরের ১০ ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী গ্রুপের মধ্যে কমবেশি সহিংসতা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিরসনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে রানীনগর ইউনিয়নের ভাটিকয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা গাড়ীর বহর নিয়ে যোগ দেয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সভাস্থলের পাশে থাকা একটি হাইস গাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে একটি ওয়ান শ্যুটার গান ও একটি শর্টগান জব্দ করে। আগ্নেয়াস্ত্র দুটির মধ্যে একটি পৌর সদরের ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহেদুল হক জনির নামে রেজিষ্ট্রেশন করা, আরেকটি অবৈধ। এ সময় গাড়ির চালক সদর উপজেলার চরতারাপুর গ্রমের বাসিন্দা মো: হাবিবুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। তবে ওই সময় কাউন্সিলর জনি গাড়িতে ছিলেন না।
হাইস গাড়ীর মালিক উজ্জল হোসেন বলেন, চারটি গাড়ী ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। গাড়ীর মধ্যে কেউ যদি অস্ত্র রাখে তাহলে সেই ক্ষেত্রে চালকের কিছু করার থাকেনা। আটক চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যারা অস্ত্র নিয়ে গাড়ীতে উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, একটি বর্ধিত সভায় অনেক নেতাকর্মি ও বিপুল সংখ্যক গাড়ীর বহর ছিল। কে কি অবস্থায় ছিলেন সেটা আমাদের জানার কথা নয়। কোন গাড়ীতে কারা কি উদ্দেশ্যে নিয়ে বহন করেছে সেটা আমি বলতে পারছিনা।
সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, অধিকাংশ ইউনিয়নে মনোনয়ন না পাওয়ায় প্রতিটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলেরই নেতাকর্মী। রানীনগর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী তৌফিকুল ইসলাম পীযুষের বিপরীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক টুটুল কাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। সভায় বিশৃঙ্খলা করতেই তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র অবস্থায় এসেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, একটি বৈধ আর একটি অবৈধ মোট দুটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সভাস্থলের একটি হাইস থেকে। এ সময় হাবিবুল্লাহ নামে চালককে আটক করা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা রোধে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। ওসি বলেন, এ ঘটনায় রাতেই পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় হাবিবুল্লাহকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলায় কয়জন আসামী ও তাদের নাম জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওসি।