মাহফুজ আলম, কাপ্তাই ( রাঙামাটি) থেকে : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০২১ কে প্রভাবিত করার জন্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তৎপরতা , প্রার্থীদের হুমকি, হত্যা ও অপহরণের চেষ্টা প্রতিহত করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে রাঙামাটি ২৯৯ আসনের সাংসদ সহ রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা সংবাদ সম্মেলন করছন ।
প্রত্যেকটি নির্বাচনকালীন সময়ে পাহাড়ে বাছাই করে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাকর্মীদের হত্যা, অপহরণ, জখমসহ হুমকির মিশনে নামে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিকদলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের হত্যাসহ আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প বসানোর দাবি জানিয়েছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার- এমপি।
বৃহস্পতিবার(৪ই নভেম্বর) বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রভাবিত করার জন্য রাঙামাটির বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তৎপরতা, প্রার্থীদের হত্যা, অপহরণের অপচেষ্টা প্রতিহত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে দীপংকর তালুকদার বলেন, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর যেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে সেসব এলাকায় অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
নির্বাচনী এলাকায় আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মাঝে মধ্যে অনেকটা প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাদের এই অপতৎপরতার আসল উদ্দেশ্যেই হচ্ছে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে জোর পূর্বক জিতিয়ে নেয়া। এজন্য আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের টার্গেট করে হত্যা, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকী দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রহুল আমিন, হাজি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, কৃষকলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অভয় প্রকাশ চাকমা, দপ্তর সম্পাদক রফিক আহমদ তালুকদার, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে দীপংকর তালুকদার বলেন, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২য় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি, কাপ্তাই এবং বরকল উপজেলায় ইউপি নির্বাচন। পার্বত্য এলাকার কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর প্রচন্ডভাবে নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তাদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা ও আক্রমনে আমাদের বহু নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। নির্বাচন আসলে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা আরো বেড়ে যায়। যেমন চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবর কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এভাবে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের খুন ও জখম করে চলেছে। ২য় ধাপসহ আগামী প্রত্যেক নির্বাচনকে জোর পূর্বক তাদের অনুকূলে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দৌরাত্ম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমরা মনে করি তাদের এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত ভাবে ব্যাহত হবে।