কলিট তালুকদার : জমে উঠেছে পাবনার বেড়া পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচনে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে, ভাই ও ভাতিজিসহ ৬ জন মেয়র পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে। ২ নভেম্বর মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে তারা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে এ মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বেড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার মাহমুদা আক্তার জানান,বেড়া পৌর মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পাবনা-১ আসন (বেড়া সাঁথিয়া) এর সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিফ শামস রঞ্জন, ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজি এস এম সাদিয়া আলম।
এ ছাড়া মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এইচ এম ফজলুর রহমান মাসুদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ডা. আব্দুল আওয়াল ও কে এম আব্দুল্লাহ। এদিকে সংসদ সদস্যের পরিবার থেকেই তিনজন মেয়র প্রার্থী হওয়ায় ব্যাপক জল্পনা ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। বিব্রত অবস্থায় পরেছে আওয়ামী লীগ নেতারা।
সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, দলের কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমাকে রাজনীতি থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। বেড়া পৌরসভায় ১৭ বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছি। মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলেছি। আধুনিক নগর গড়ার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতেই জনগণের দাবির মুখে প্রার্থী হয়েছি। দল মনোনীত প্রাার্থী আমার ভাতিজা হলেও রাজনীতিতে সে নতুন, অনভিজ্ঞ। তার তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। আমি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে না, জনগণের দাবীর মুখে নির্বাচন করছি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন বলেন,আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যাচাই-বাছাই করেই আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা আছে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ নৌকার প্রার্থীকেই ভোট দেবে।
আরেক প্রার্থী সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর বড় ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া আলম বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, আমার বাবা বদিউল আলম বেড়া আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। আমি দীর্ঘদিন উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। জনগণের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি। তিনি আরো বলেন, পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে বেড়ায় সামাজিক মূল্যবোধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পথে। শান্তির জনপদ হিসেবে বেড়া পৌরসভাকে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য।
এ বিষয়ে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু বলেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে সে নির্বাচিত হবে। একই পরিবার থেকে তিনজন প্রার্থী হওয়াকে তিনি গণতান্ত্রিক অধিকার বলে মন্তব্য করে আরো বলেন, পরিবার যখন বড় হয়ে যায় তখন আলাদা ইউনিট গড়ে ওঠে। তবে মনে রাখতে হবে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে সে সেই হোক তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে সংসদ সদস্যের পরিবার থেকেই তিনজন মেয়র প্রার্থী হওয়ায় বিব্রত অবস্থায় পরেছে আওয়ামী লীগ নেতারা।
এ ব্যাপরে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল বলেন, সংসদ সদস্যর পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় দলের নেতারা কর্মীরা বিব্রত। নৌকার ভোটারদের জন্য বিভ্রান্তিকর। দলের অন্য বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে মাঠে। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে আনতে চেষ্টা করছি।