মাহফুজ আলম, কাপ্তাই( রাঙামাটি) থেকে : পার্বত্য রাঙ্গামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এ জেলার বন, প্রাকৃতিক পানির উৎস ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।জারিকৃত এই রুলে পরিবেশ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ২২ জনকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে সংবাদ পাওয়ার গেছে । এর আগে সংশ্লিষ্ট আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট পিটিশন আবেদন করেন আইনজীবী উবাথোয়াই মারমা। এরই প্রেক্ষিতে গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জনস্বার্থমূলক এই মামলাটি করেছেন বান্দরবানের থানচি উপজেলার বাসিন্দা আইনজীবী উবাথোয়াই মারমা। আগামী চার সপ্তাহর মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং মামলায় উল্লেখিত বিধি কেন অবৈধ, বেআইনী, অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবেনা তৎমর্মে কারন দর্শানোর আদেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট।
মামলায় আবেদনকারী দি চিটাগাং হিলট্র্যাষ্ট ফরেষ্ট ট্রানজিট রুলস ১৯৭৩ এর ৯বিধির বৈধতা ও সাংবিধানিকতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। এতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রধান বন সংরক্ষকসহ ২২ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার বাদী ওবাথোয়াই মারমা এই প্রসঙ্গে বলেন, পার্বত্য এলাকায় একটি অসাধু চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে বন উজাড়, প্রাকৃতিক সৃষ্ট পাথর উত্তোলন এবং জলধারা ও জলাধার দখল করে পানির উৎস ধ্বংস করায় পাহাড়ী এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি স্কটল্যাল্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বন ও ভূমি ব্যবহারের বিষয়ে গ্লাসগো নেতাদের ঘোষনাপত্রের আলোকে উচ্চ আদালতে এই প্রতিকার চেয়ে মামলাটি করা হয়েছে। রিট আবেদন শুনানী করেন বান্দরবানের প্রথিতযশা আইনজীবী ড. মহিউদ্দিন। তাঁকে সহযোগিতা করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ইলিয়াছুর রহমান, এড.মুর্শেদুল ইসলাম।
এদিকে হাইকোর্টে পাহাড়ের জীব বৈচিত্র রক্ষায় এই মামলা তাৎপর্যপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক হিসেবে দেখছেন পরিবেশবাদীরা। পার্বত্য অঞ্চলের পরিবেশ, প্রকৃতি সুরক্ষায় এই মামলা মাইলফলক হিসেবে দেখছেন পরিবেশবাদী সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানসহ বিভিন্ন এলাকায় নদী ঝিরির জলাধার ধ্বংস করে প্রাকৃতিক পাথর উত্তোলন, বন ধ্বংস, পাহাড় কর্তনসহ পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে স্বার্থান্বেষী মহল।