সাইফুর নিশাদ , নরসিংদী প্রতিনিধি : মনোহরদীতে এক প্রচন্ড বিশৃঙ্খল প্রস্তুতির ভেতর দিয়ে একটি অভাবিত সুুশৃঙ্খল ভোট সম্পন্ন হয়েছে। রোববার এখানে চতুর্থ দফার ইউপি নির্বাচন নিয়ে এ পরিস্থিতি হয়। মনোহরদীর ৯ ইউনিয়নে গত রোববার নির্বাচন সম্পন্ন হয়। এর প্রস্তুতি পর্বটি ছিলো এখানে ব্যাপক বিশৃঙ্খল। এ দিয়ে একটি সুশৃঙ্খল নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন সংশ্লিষ্টরা। প্রাথমিক বিশৃঙ্খলা ছিলো এখানে মনোনয়নপত্র বাছাই পর্ব নিয়ে। সেখানে প্রার্থীদের ফোন করে নির্বাচন অফিসে ডেকে এনে ২০/২৫ হাজার টাকা নিয়ে মনোনয়নপত্র সংশোধন করে দেয়ার অভিযোগ উঠে। এ জন্য অফিস সময়ের বাইরে অর্ধরাত পর্যন্ত এখানে প্রার্থীদের আনাগোনা ছিলো দৃষ্টি আকর্ষন করার মতো। এ ব্যবস্থায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশুমার অর্থ বানিজ্যের বিষয়টি ছিলো এখানে ওপেন সিক্রেট। বিশেষতঃ ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের কাছ ব্যাপক টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি এখানকার অফিস পাড়ায় সবার মুখে মুখে ফেরে। এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সাথে।
তিনি দাবী করেন,মনোনয়নপত্রে ছোটখাটো ত্রুটি দূরীকরনে তার এক্তিয়ার রয়েছে।অর্থের বিনিময়ে ছোট ত্রুটির নামে বড়ো ত্রুুটি সারানো হলে কি হবে?এর জবাবে তিনি বলেন, তাহলে আপনারা লিখেন,কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে হ দেখবে। একই সাথে নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগেও অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সরকারী প্রাথমিক শিক্ষক থাকা সত্বেও ৫ শ’/১ হাজার টাকার বিনিময়ে কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষকদের পোলিং অফিসার নিয়োগেরও অভিযোগ রয়েছে। দায়িত্ব বঞ্চিত প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষোভ অভিযোগ ইউএনওর কানেও উঠেছে। একই সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে একাধিক কেন্দ্রে নিয়োগ দিয়েও চিঠি প্রদান করে বিভ্রান্তিতে ফেলা হয় বলেও অভিযোগ আছে।নির্বাচনী ট্রেনিং করেও নিয়োগপত্র পাননি এ রকম কর্মকর্তাদের নির্বাচনের আগের রাতেও হয়রান হয়ে নির্বাচন অফিসে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে।অতি লোভের এতোসব বিশৃঙ্খলা নিয়েও সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান ছিলো যথেষ্ট চ্যালেন্জিং। তথাপি তা সম্পন্ম হয়েছে কেবল প্রশাসনিক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সময়োচিত ও যথাযথ ভূমিকায়। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচন ভোটার পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে।এ ভোট অনুষ্ঠানে অনৈতিক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়নি।বড়চাপা ইউনিয়নের পাইকান কেন্দ্রের বাইরে কথা হলো কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ফেরা আজিমউদ্দীন (৫৫) এর সাথে।
তার মন্তব্য, এ সরকারও যে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেন ভুলতে বসেছিলাম। চালাকচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফখরুল মান্নান মুক্তো। নৌকা নিয়ে প্রার্থীতা করছেন তিনি। তার নিজ কেন্দ্রের বাইরে কথা হলো কয়েক ভোটারের সাথে। তারাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রোববারে চলমান ভোট ব্যবস্থায়। হাফিজপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মাঠে দাঁড়িয়ে কথা হলো ২ ভোটারের সাথে। তারা জানান, সামান্য গোলযোগের মুখে কেন্দ্রে ভোট গ্রহন বন্ধ ছিলো কিছু সময়। তার আগে পরে ভোট হচ্ছে এখানে ভোটের মতো করেই। শুকুন্দী ভিটি পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে বাঁধা পেতে হলো পদে পদে। কি আনসার কি পুলিশ সবার কাছ থেকে বাঁধা প্রাপ্তি ভোট কেন্দ্রে কড়াকড়ি ব্যবস্থার জানান দিচ্ছিলো। পরে নির্বাচন কমিশনের সংবাদকর্মীর কার্ড প্রদান করে তবেই রেহাই মিললো। এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম কাসেম বলেন, কিছু অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা সত্বেও প্রশাসন,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবার সমন্বয়ে তা উৎরানো সম্ভব হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানে এলাকার ভোটারদের সহযোগীতা না থাকলে না পেলে এ রকম ভোট সম্ভব ছিলো না।