মোঃ আসাদুল্লাহ আল গালিব , দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলায় দ্বিতীয় বারের মতো ব্রোকলির চাষ হয়েছে। রঙ ভিন্ন হলেও দেখতে হুবহু ফুলকপির মতোই। সবুজ রঙের এই সবজির পুষ্টিগুণ ফুলকপির চেয়েও অনেক বেশি। ব্রোকলি অন্যান্য সবজির অপেক্ষায় বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ।
চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের মোঃ মতিয়ার রহমান দ্বিতীয় বারের মতো এ সবজি আবাদ করেছেন। আগের বছরের তুলনায় এবছর ফলনও হয়েছে অনেক ভালো। নতুন জাতের এ সবজির কদরও রয়েছে অনেক। লোকজন উৎসাহ নিয়ে ব্রোকলি কিনছেন। ফলন ও বাজার দর ভালো পাওয়ায় ব্রোকলি চাষে হাসি ফুটেছে কৃষক মোঃ মতিয়ার রহমানের মুখে। অল্প খরচে ও অল্প সময়ে অধিক লাভ পাওয়ায় অন্যান্য কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন এ জাতের সবজি আবাদ করতে। প্রথমবার লাভবান হওয়ায় আবারও তিনি এই ব্রোকলির চাষ করছেন। তাকে অনুকরণ করে এবার ওই অঞ্চলে অনেক কৃষক এই ব্রোকলি চাষ করছেন।
ব্রোকলি রোপণের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে পুষ্পমঞ্জুরি সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। ধারালো ছুরি বা ব্লেড দ্বারা তিন ইঞ্চি কান্ডসহ পুষ্প মঞ্জুরি কেটে সংগ্রহ করতে হয়। এভাবে একই জমি থেকে মাসব্যাপি কয়েকবার ব্রোকলি সংগ্রহ করা যায়। পুষ্পমঞ্জুরি মোটামুটি জমাট বাঁধা অবস্থায় সংগ্রহ করা উচিত। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে হেক্টরপ্রতি ফলন ১২-১৩ টন পাওয়া যায় বলে কৃষি বিভাগ জানায়।
দেশের সব অঞ্চলেই ব্রোকলি চাষ করা যেতে পারে। ব্রোকলি উঁচু জমিতে বাম্পার ফলন হয়। সাধারণত যে ধরনের জলবায়ুতে ফুলকপির চাষ হয় সেখানে ব্রোকলি ভালো জন্মে। তবে ব্রোকলির পরিবেশ উপযোগিতার সীমা একটু বেশি বিস্তৃত। পানি জমে না এরূপ উঁচু জমি, উর্বর দো-আঁশ মাটি হলে ফলন ভালো পাওয়া যায়। ব্রোকলির গাছ ১৫-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে ভালো জন্মে। সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধা আছে এমন জমি ব্রোকলি চাষের জন্য নির্বাচন করতে হয়। ব্রোকলির সফল চাষের জন্য মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণে জৈবসার থাকা প্রয়োজন। তবে সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধা আছে এমন জমি ব্রোকলি চাষের জন্য নির্বাচন করতে হয়।
মতিয়ার রহমান বলেন, গত বছর রংপুরের সিও বাজার থেকে ব্রোকলির বীজ সংগ্রহ করেছিলাম। এবছর ১২ শতক জমিতে ১২৬০টি ব্রোকলির চারা লাগিয়ে ভাল ফলন পেয়েছি। প্রতিপিস ব্রোকলি ২০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করেছি। এতে লাভ মোটামুটি হবে বলে আশা করছেন। এছাড়াও তিনি ফুলকপি ও পাতাকপি চাষ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার জোহরা সুলতানা বলেন, সুশ্বাদু সবজি ব্রোকলি চিরিরবন্দর উপজেলায় আবাদের অনেক উপযোগী। তবে চাষিরা পরামর্শগুলো কাজে লাগাতে পারলে ব্রোকলি চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। ইউরোপ দেশের রুচিশীল সবজি হিসেবে পরিচিত ব্রোকলি বাংলাদেশের ফুলকপির মতো। তাই এটিকে অনেকেই বলেন ‘সবুজ ফুলকপি’।