মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর : গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়নের গুজিঁখা গ্রামে সূর্যমুখী ফুলের খেত দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছেন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তাঁরা ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন, বাগানের ভেতরে প্রবেশ করে ফুল ছুঁয়ে দেখছেন। এতে গাছ ও ফুলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সূর্যমুখী একধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮ ফু) হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ। এর বীজ হাঁস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
জানা গেছে, দর্শনার্থীদের পায়ের চাপে ভেতরে ভেঙে গেছে অনেক গাছ। বিশেষ করে সূর্যমুখী ফুলে বীজ আসার সময় হয়েছে। এ অবস্থায় গাছ নড়াচড়ায় বীজের ক্ষতি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আশপাশের অন্যান্য ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে মানুষের ঢল নেমে ছিল। এতে আর ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছ। খেতের পাশের বাসিন্দা নওয়াগাঁও গ্রামের সালাউদ্দিন বাবুল বলেন, দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসছে, এতে আমরা খুশি। তবে তাঁরা খেতের ভেতরে প্রবেশ করে অনেক গাছ পায়ে মাড়িয়ে দিচ্ছেন, ফুল ছিঁড়ে নিচ্ছেন। এতে গাছ ও ফুলের ক্ষতি হচ্ছে। ভেতরে প্রবেশ না করে বাইরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে সবাইকে অনুরোধ করেন তিনি।
খেতের মালিক জাহাঙ্গীর হাসান রতন বলেন, মূলত তেল উৎপাদনের উদ্দেশ্যে তিনি সূর্যমুখী চাষ করেছেন। ফুল দেখতে মানুষের এভাবে ঢল নামবে, তা ভাবতে পারেননি। এতে তিনি খুশি হয়েছেন। তবে দর্শনার্থীদের দায়িত্বশীল হতে অনুরোধ করেন তিনি। জাহাঙ্গীর হাসান বলেন, ভেতরে প্রবেশ করায় ফুলের ক্ষতি হচ্ছে, অনেক গাছ ভেঙে যাচ্ছে। এতে তেল উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবেন বলেও জানান জাহাঙ্গীর হাসান। গৌরীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, ফুলের সৌন্দর্য আমরা সবাই উপভোগ করতে চাই। তাই বলে গাছটাই যদি নষ্ট করে ফেলি তবে আর ফুল পাওয়া যাবে না। যেসব দর্শনার্থী সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসছেন, সবার উচিত যত্নবান হওয়া। বিশেষ করে এখন বীজ আসার সময়। এ অবস্থায় গাছ নড়াচড়া করলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে