নিজস্ব প্রতিবেদক : জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনার পর হামলা ও মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে রবিউল করিমের পরিবার। প্রতিপক্ষের মারধরে আহত হয়েছে তার পরিবারের কয়েকজন। উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করেছে প্রতিপক্ষরা। আর শুন্য ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে বলে দাবি রবিউল করিমের। ঘটনাটি পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের পৈলানপুর গ্রামের।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, নিজেদের পারিবারিক জমিজমা নিয়ে ওই গ্রামের মৃত ওয়াছিম উদ্দিনের ছেলে রবিউল করিমের সাথে তারই প্রতিবেশি চাচাতো ভাই ইব্রাহিম সরদারের ছেলে আব্দুর রশিদের বিরোধ চলছে। সেই বিরোধের জেরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে কথা কাটাকাটির সুত্র ধরে রশিদের পক্ষের লোকজন রবিউল করিমের বাড়িতে ঢুকে সদস্যদের মারধর করে। পরদিন ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে আবারো তারা রবিউল গংদের উপর হামলা চালালে দুইপক্ষের মারামারি হয়।
রবিউল করিমের মেয়ে রোজিনা খাতুনের অভিযোগ, হামলায় তার মা হাসনা খাতুন, ছোট বোন রনজিনা খাতুন ও ভাগ্নে রাজ আহত হয়ে ভাঙ্গুড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় রশিদের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন বাদি হয়ে রবিউল করিমসহ ১৫ জনকে আসামী করে চাটমোহর থানায় অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, রবিউল করিম ও তার নাতী শাফি কবির রবিন গং রশিদ গংদের উপরে হামলা করলে তারা চারজন আহত হয়ে চাটমোহর হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদিকে, এ ঘটনায় হামলা ও মামলার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন রবিউল ও তার পরিবারের লোকজন। অপরদিকে, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রবিউল করিমের নাতী শাফি কবির রবিনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে।
এদিকে, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে রশিদের পরিবারের লোকজন গত ১ মার্চ রবিউল করিমের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। এ সময় তারা একটি টিনের বসতঘর, পাকা দালানবাড়ির সকল জানালার থাই গ্লাস, টয়লেট, চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। এছাড়া গেটের তালা ভেঙ্গ ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্নালঙ্কার, টিভি সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে বলে দাবি রবিউল করিমের।
অভিযোগের বিষয়ে আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা বাড়িতে থাকি না। ওরাই উল্টো আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। থানায় অভিযোগও দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে নিজেদের বাড়ি ভাঙচুরের নাটক সাজিয়েছে।
চাটমোহর থানার ওসি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, দুইপক্ষই মামলা করেছে। নিলুফা ইয়াসমিন ও আব্দুর রহিম বাদি হয়ে পৃথক দু’টি মামলা করেছেন। নিলুফা খাতুনের মামলায় একজনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। রহিমের মামলায় এখনও কাউকে আটক করা যায়নি। তারপরও পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কাউকে হয়রানী করা হচ্ছে না। হামলা-ভাঙচুরের সাথে যারা প্রকৃতভাবে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।