মেহেদী হাসান আকন্দ: “টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচি (সেল্প) ৮ মার্চ দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০ টায় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজনীন সুলতানা, ব্র্যাক গ্রামীণ সংগঠন পল্লী সমাজ থেকে আসা সদস্যগণ, ছাত্রী স্বাবলম্বী, নারী প্রগতি, শ্রম উন্নয়ন, মহিলা পরিষদ, মহিলা উন্নয়ন কেন্দ্র, জাতীয় মহিলা সংস্থা এবং বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিগণদের নিয়ে কালেক্টর ভবনের সামনে থেকে র্যালী বের করে শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ শেষে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়। জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে র্যালী পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সংসদ সদস্য হাবীবা রহমান খান (শেফালী)। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, পৌর মেয়র আলহাজ নজরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, ব্র্যাক নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি প্রবাল কুমার সাহা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হাবিবা রহমান খান শেফালী ব্র্যাকের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচী তলে ধরে বলেন, বিগত ৫০ বছর ধরে নারীর অধিকার, জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণ, নারীর প্রতি সহিংসতা বিলোপ ও নারীর অমিত সম্ভাবনা বিকাশে কাজ করছে। যার প্রয়োজন সবচাইতে বেশি, তার পাশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দাঁড়ানোই ব্র্যাকের উন্নয়ন দর্শনের ভিত্তি। তাই ব্র্যাক তার জন্মলগ্ন থেকে নারীকে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি, কার্যক্রম ও মডেল গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নেও সরকারের বৃহৎ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে নারীকে বিবেচনায় নিয়ে ব্র্যাক ব্র্যান্ডটিই গড়ে ওঠেছে নারীর ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে।
তিনি আরোও বলেন, আগে বলতাম, আমি নারী, আমি কি তোমাকে ছাড়া চলতে পারি? এখন বলি, আমি নারী, আমিও পারি। এক নারী আরেক নারীকে সহায়তা করতে হবে। নারী পুরুষ উভয় মিলে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জনাব কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, আমরা দেখতে চাই সকল নারী যেন হাসি খুশি থাকে। নারী উদ্যোক্তাদের কেন্দ্রীয় সংগঠন তৈরির গুরুত্বারোপ করেন। নারী উদ্যোক্তা এবং নারী নেত্রীবৃন্দদের জন্য সব সময় সেবার দুয়ার খোলা থাকবে বলে তিনি জানান। ব্র্যাকের সফল ও সাহসী নারীদের সম্মাননা প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নানামুখী কাজের মাধ্যমে বর্তমানে নারীরা সমাজে ও দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। কর্মক্ষেত্রসহ সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীর এই সাহসী ভ‚মিকাকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে নারীর জয়যাত্রাকে অব্যাহত রাখা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ম‚ল চাবিকাঠি। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে ব্র্যাক গণনাটকের পরিবেশনায় ‘ভরসা’ পথ নাটক পরিবেশিত হয়। এছাড়াও ব্র্যাক ‘সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা’ কর্মসূচির উপকারভোগিদের মধ্য থেকে তিনজন সাহসী নারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।