ইয়াছিন আরাফাত, কক্সবাজার : কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুরে পাহাড়ী এলাকায় বিরল বাঁশের সন্ধান পেয়েছে বনবিভাগ। চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের মহেশখালী রেঞ্জের আওয়াতাধীন শাপলাপুর ইউনিয়নের জামির ছড়ি পশ্চিম পাড়া এলাকায় এ বিরল বাঁশির বাঁশের সন্ধান পায় স্থানিয় বিট কর্মকর্তা রাজীব ইব্রাহীম। তিনি জানান, আমি প্রতিদিনের মত পাহাড়ে কাজ করতে গেলে হঠাৎ এ বাঁশের দিকে চোখ যায়। তখন ভাল করে দেখে প্রাথমিক ভাবে বাঁশটির জাতের নাম ধলো বাঁশ বলে মনে হয়। ভাল করে লক্ষ্য করে দেখা যায় এক একটা বাঁশের গিরা পর্যন্ত ৩৬ থেকে ৪৬ ইঞ্চি। তবে সচারচর যে ধলো বাঁশ দেখা যায় তা থেকেই এই ধলো বাঁশ ভিন্ন। যেটা একমাত্র ভারতের আসাম ও চীনে পাওয়া যায়। যেটা সংগীত পরিবেশনের বাঁশির তৈরীতে ব্যবহার হয়। যেটার বাজার মূল্য অনেক। জানাগেছে, বাংলাদেশ সহ ভারত নেপালে বিভিন্ন রকম বাঁশি দেখা যায়। তার মাঝে বহুল পরিচিত বাঁশী গুলো হলো সরল বাঁশি, আড় বাঁশি, টিপরাই বাঁশি, সানাই বাঁশি, ভিন বাঁশি, মহন বাঁশি। বাঁশি সাধারণত এক বিশেষ ধরনের বাঁশ দিয়ে তৈরি করতে হয়, যেগুলোর দুটো গিঁটের মাঝের অংশ অনেকটা লম্বা হয়। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ১১,০০০ ফিট উচ্চতায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি পাতযুক্ত অঞ্চলে এই ধরনের বাঁশ প্রচুর জন্মায়। এই বাঁশ সাধারণত উত্তর-পূর্ব ভারত (অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও ত্রিপুরা) এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় (কেরল) পাওয়া যায়, এসব অঞ্চলে বেশিরভাগ বাঁশের দু’ গিঁটের মাঝের উচ্চতা ৪০ সেমির (১৬ ইঞ্চি) বেশি হয়ে থাকে। আর তেমন এক ধরনের বাঁশের সন্ধান পাওয়া গেছে উপজেলার শাপলাপুরের জামির ছড়ি এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে বসবাসকারী মৃত চান মুল্লুকের পূত্র শাহাব উদ্দিনের বসত ভিটায়। এবিষয়ে শাহাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত দুই বছর আগে গভীর পাহাড় থেকে উল্লেখিত বাঁশের চারা ডোয়া এনে এই বাঁশ বাড়ীর আঙ্গিনায় রোপণ করা হয়েছে। তবে বাঁশটির আমরা সচারাচর বাড়ির কাজে ব্যবহার করে বলেও জানান তিনি। মহেশখালী উপজেলার রেঞ্জ কর্মকর্তা অভিজিৎ কুমার বড়ুয়া বলেন, মহেশখালীতে পাহাড়ী ধন-সম্পদে ভরপুর। তবে আমরা যে জাতের বাঁশের সন্ধান পাওয়া গেছে তা আমরা বন বিভাগের বাঁশ গবেষণাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেছি। যদিও বা এ বাঁশ বাঁশির কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে ব্যাপক আয়ের সম্ভবনা আছে। তাইল ঐ বাঁশ চাষির ভাগ্য খুলে যাবে। এ বিষেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও সংগীত ভিত্তিক সংগঠন প্রভাত ফেরীর মুরালি বাঁশি বাদক ট্রেইনার রফিকুল ইসলাম বলেন, মহেশখালীতে যে বাঁশের সন্ধান পাওয়া গেছে তা ছবিতে দেখেই বাঁশির জন্য উপযুক্ত মনে হয়েছে। তবে হাতে পেলেই চুড়ান্ত বলতে পারবো। যদি বাঁশির বাঁশ হলে দেশের বাঁশির চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।