রিজাউল করিম সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার বালিথায় শিশু আলিফ ফরহাদকে নৃর্শসভাবে নির্যাতনের অভিযোগে মামী রানী বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে দুপুরে চরবালিথা এলাকায় মরিচ্চাপ নদীর পাঁড় থেকে ক্ষত-বিক্ষত ওই শিশুকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে তারা তাকে দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আটককৃত রানী বেগম (২২) চরবালিথা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী। তারা দু জনই নির্যাতিত শিশুটির আপন মামা ও মামী। এদিকে, আহত শিশুটির নাম আলিফ ফরহাদ (০৭)। সে চরবালিথা গ্রামের মঈনুদ্দীন সরদারের ছেলে। উদ্ধারকারি শিশুটির ছোট মামা আশিকুজ্জামান জানান, আমি মরিচ্চাপ নদীর পাঁড় দিয়ে হেটে বাড়ি ফিরছিলাম। এসময় উপুড় হয়ে তাকে পড়ে থাকতে দেখি। পরে চিৎ করে দিয়েই তাকে চিনতে পারি সে আশার ভাগ্না। তার চোখে ধারালো কিছু দিয়ে খুচিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আর ঠোট কেটে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। তৎক্ষনাৎ তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।
শিশুটির পিতা মঈনুদ্দীন সরদার জানান, আমার প্রথম স্ত্রী শারমীন সুলতানা মারা যাওয়ার পরে শিশু পুত্র আলিফ একই গ্রামে তার নানী সকিনা খাতুনের কাছে থাকত। সৎ মায়ের অত্যাচার ছেলেটাকে যেন সইতে না হয়, সে জন্য তার নানীর কাছে তাকে রাখা হয়েছিল। তবে, ওর মামি রাণী বেগম প্রায়ই তার উপর অত্যাচার করত বলে তিনি আরো জানান। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক পারভীন আক্তার জানান, আমরা আশঙ্কা করছি, ফারহানের দুটো চোখই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার ঠোট,গলা ও গায়ের কয়েক জায়গায় কাটা দাগ রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটির মামী রানী বেগম (যাকে সে মা বলে ডাকতো) তাকে বসত ঘরের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুচিয়ে-খুচিয়ে মারাত্মক ভাবে রক্তাক্ত জখম করে এবং তার চোখের আশে পাশে, মুখমন্ডলে, নাকেমুখে, ঠোটে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর রানী বেগম শিশুটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুত্বর জখম করে। শিশু আলিফ মৃত্যুবরণ করেছে মনে করে ফেলে রেখে যায়। তিনি আরো জানান, আটক রানী বেগমকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।