আল এনায়েত করিম রনি, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজলার সীমান্ত ঘেঁষা পাথরডুবি ইউনিয়নের একটি ভারতীয় কাঁটাতার সংলগ্ন দক্ষিণ বাঁশজানীর ঝাকুয়াটারী গ্রামে বাঘ আতংক বিরাজ করছে। রাত জেগে লাঠিশোটা,টর্চ লাইট নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন এলাকাবাসী। হঠাৎ দুই দিন আগে গ্রাম দুটি স্থানে সন্ধ্যার সময় বাঘ আকৃতির দুইটি প্রাণী দেখতে পায় স্থানীয়রা। এরপর থেকে বাঘের আতংক ছড়িয়ে পড়ে সীমান্ত লাগোয়া গ্রামটিতে। বাঘের আক্রমণ প্রতিহত করতে দুই রাত থেকে দলবদ্ধ হয়ে লাঠিশোটা নিয়ে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন মানুষজন। বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয় উপজলা জুড়ে। এই বিষয়টি জানার পর করণীয় ঠিক করতে রবিবার সকালে গ্রামটি পরিদর্শন করেছেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা।
বাঘ দেখেছেন এমন দাবী করা ওই গ্রামের বাসিন্দা কফিল উদ্দিন বলেন, ২৫ মার্চ শুক্রবার গভীর রাতে বাঘের গােঙানীর (আওয়াজ) শব্দ শুনে আমার স্ত্রী আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তােলেন। পরে জানালা খুলে দুজনেই বাড়ির গেটে দুটি বাঘ বসে থাকা দেখতে পাই। পরের দিন গ্রামের মানুষকে জানালে তারা আমার কথা বিশ্বাস করেনি।কিন্তু ২৬ মার্চ শনিবার বিকেলে গ্রামের একটি বাশঝাড়ে প্রাণী দুটিকে পুনরায় দেখতে পান কয়েকজন এলাকাবাসী। এরপর থেকে এলাকায় এক প্রকার বাঘ আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
আরেক বাসিন্দা ও মইদাম দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আনায়ার হােসেন বলেন, শনিবার মাগরিবের পর তার বাগানে কালাে ছাপ ছাপ দাগ বিশিষ্ঠ বাঘ সাদৃশ্য দুটি প্রাণী দেখেছেন। তবে চিতাবাঘ বা অন্য কােন প্রাণী কিনা সে বিষয় তিনি নিশ্চিত নন। তবে এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ায় শনিবার রাত বিষয়টি ভূরুঙ্গামারী থানাকে অবহিত করেন তিনি। বাঁশজানী গ্রামের বাসিন্দা শাহআলম বলেন, বছর তিন আগে ভারত থেকে একটি চিতাবাঘ এসেছিল। পরে স্থানীয়রা বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। সেই হিসেবে ধারণা করা যায় এবারেও চিতাবাঘ এসেছে।
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হােসেন বলেন, স্থানীয় লোকজন তাকে অবহিত করেছেন।বিষয়টি উপজেলা বনবিভাগকে অবগত করেন তিনি। এলাকাবাসীকে বন্যপ্রাণী মেরে ফেলা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন তিনি।
ভূরুঙ্গামারী উপজলা বন কর্মকর্তা(অতি:দায়িত্ব) নবির উদ্দিন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করছি। প্রাণী দুটির বিষয় এলাকাবাসির সাথে কথা বলেছি। প্রাণী দুটি বাঘ কিনা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি। তবে বাঘের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়া গেলে ঢাকায় জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে