যশোর প্রতিনিধি : চরমপন্থি সংগঠন নিউ বিপ্লবি কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা একাধিক হত্যা ও অস্ত্র মামলার প্রধান আসামী কিরনকে সহযোগিসহ আটক করেছে যশোরের ডিবি পুলিশ। এসময় তার কাছথেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আটক বাসুদেব সাহা ওরফে তিল্লক ওরফে কিরন ওরফে তপন ওরফে বাদল ওরফে মাহমুদুর রহমান পটুয়াখালী সদর উপজেলার পুরান বাজার গ্রামের নারায়ন চন্দ্র সাহার ছেলে। তার অন্য সহযোগীরা হলেন অভয়নগর উপজেলার রামসরা গ্রামের নিখিল মন্ডলের ছেলে দিপংকর মন্ডল ও একই গ্রামের পঞ্চরাম মন্ডলের ছেলে কৃষ্ণপদ মন্ডল।
পুলিশ জানায়, ডিবির এসআই শামীম হোসেন তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কিরনের অবস্থান শনাক্ত করে। শামীমের নেতৃত্বে ১৯ এপ্রিল একটি চৌকসটিম প্রথমে ময়মনসিংহ জেলায় অভিযান চালায়। এরপর পর্যায়ক্রমে, ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী এলাকায় অভিযান শেষে সর্বশেষ মাদারীপুর জেলায় অভিয়ান চালিয়ে শুত্রবার সকালে কিরণকে আটক করা হয়। এরপর তাকে নিয়ে যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ফের অভিযান চালিয়ে অপর দুই আসামিকে আটক করা হয়। তাদের কাছথেকে একটি এক নালা বন্দুক উদ্ধার করা হয়। যশোরের ডিবির অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার জানান, আসামিরা সংঘবদ্ধ কথিত ‘নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট’পার্টির সক্রিয় সদস্য।
তারা দলীয় ছদ্মনাম ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় অবৈধ অস্ত্র গুলি, বিস্ফোরকদ্রব্য ইত্যাদি ব্যবহার করে হত্যা, চাঁদাবাজি করে চলেছে। ইতোপূর্বে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় তারা সংঘবদ্ধ হয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে দল গঠন করে যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুরসহ আশপাশের জেলায় মাছের ঘের দখল, চাঁদাবাজি ও হত্যাকা- ঘটানো তাদের পেশা। তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি অভয়নগরের হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য উত্তম সরকারের নিকট চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে এ চক্রের সদস্যরা।
হত্যার পরে জড়িতরা বিভিন্ন জনের কাছে চাঁদা চাওয়ার সময় উত্তম সরকারকে খুন করার রেফারেন্স টেনে মোবাইল ফোনে ভয়ভীতি দেখায়। এ সব ঘটনার মাষ্টার মাইন্ড ছিলেন কিরন। তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১৫ থেকে ১৬ জানুয়ারি খুলনার ডুমুরিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা, যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ বাহিনীর সাথে জড়িত ইকরামুল গোলদার, প্রজিৎ বিশ্বাস, প্রল্লব বিশ্বাস, প্রশান্ত ম-ল ও বিজন কুমার ম-লকে গ্রেফতার করা হয়। এসম তাদের কাছে থাকা হত্যার মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি, বিস্ফোরক দ্রব্য, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। তাদের আটকের পরই একে একে সব রহস্য উন্মোচন হয়। এরপর থেকেই কিরন আত্মগোপনে চলে যায়। কিন্তু ডিবি পুলিশ তাদের অভিযান অব্যাহত রেখে শুক্রবার মাদারীপুর থেকে বাহিনী প্রধান কিরণকে আটক করে।