স্টাফ রিপোর্টার: ঈশ্বরদীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন রাত চলছে মিষ্টান্ন তৈরীর কাজ। এরপর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী এসব মিষ্টান্ন বিক্রি হচ্ছে নামী বেনামি প্রতিষ্ঠানের প্যাকেটে। উৎপাদিত এসব মিষ্টান্ন পাইকারী দামে বিক্রি করা হচ্ছে জেলার সুনামখ্যাত প্যারাডাইস, লক্ষী মিষ্টি ভান্ডার সহ কয়েকটি নামকরা প্রতিষ্ঠানের কাছে।
উপজেলা থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে এ কারখানাটি অবস্থিত। কারখানাটির আশেপাশে নেই কোনো প্রধান সড়ক, পুরাতন একটা বসতবাড়ির ভেতরেই তৈরী করা হয়েছে এমন কারখানা। বাড়ির প্রধান গেট সবসময় তালাবন্ধ করে রাখা হয়। যাতায়াত করা হয় পেছনের একটি দরজা দিয়ে। বাহির থেকে দেখে বোঝার উপায় নেয় ভেতরে কি হয়, আদৌ কোনো মানুষের বসবাস আছে কি না।
জানা গেছে, বাড়ির প্রকৃত মালিক রন্জু (কসাই) অনেকদিন আগে বাড়িটি জমিসহ বিক্রি করে দেন লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের রাসেল নামে এক ব্যাক্তির কাছে। সেসময় বসবাসের কথা বলে বাড়িটি ক্রয় করলেও মিষ্টান্ন তৈরীর যন্ত্রপাতি বসিয়ে তৈরী করছেন কারখানা।
সরজমিনে দেখতে বাড়ির পেছন দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে মিষ্টি ক্রেতা সেজে প্রতিবেদক উপস্থিত হন। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় বাড়িটিতে মুলত কেউই বসবাস করে না। পুরো বাড়ি জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মিষ্টান্ন তৈরীর বিভিন্ন উপকরণ। একটি রুমে বসানো হয়েছে ছানা কাটার যন্ত্র। বিশাল একটি কড়ায়ে জাল করা হচ্ছে দুধ। সেখান থেকে ছানা তৈরী করে ঐ মেশিনে কাটা হচ্ছে। উৎপাদনকৃত এসব ছানাতে বসে আছে মাছির আড্ডা।
প্রথমে প্রতিবেদকের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে অসম্মতি জানান কারখানা মালিক রাসেল। পরে স্বীকার করেন মিষ্টান্ন তৈরীর কথা। তিনি জানান, তার কারখানার তৈরী ছানা পাবনার বড় বড় নামকরা প্রতিষ্ঠানে পাইকারী বিক্রি করা হয়। মুলত কম দামে পাওয়া যায় বলেই ঐসব প্রতিষ্ঠান মালিকরা তার কারখানার ছানা কিনে থাকেন।
এরকম ভুতুড়ে জায়গায় বাড়ির মুল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টান্ন তৈরী করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন এতে সাধারন মানুষের স্বাস্থ্যঝুকি রয়েছে কি না প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং তড়িঘড়ি করে মুঠো ফোনে বাড়ির আদি মালিক রন্জু কসাইকে ডাকেন কারখানা মালিক রাসেল।
এসময় বাড়ির আদি মালিক (রন্জু) সেখানে উপস্থিত হন। তারপর কারখানা মালিক রাসেল ও বাড়ির আদি মালিক রন্জু প্রতিবেদক কে এসব নিউজ না করার শর্তে মোটা অঙ্কের টাকা অফার করেন। তবে সে টাকা গ্রহন না করায় প্রতিবেদকের উপর রেগে যান রন্জু ও রাসেল।
প্রশাসনের দৃষ্টির অগচরে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টান্ন তৈরী করে তা নামী বেনামী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করায় সাধারন মানুষ স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।