পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার আমিনপুরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৮ লাখ টাকা ছিনতাইকারী চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পাবনা ডিবি পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডিবি পুলিশের সরঞ্জামাদি।
পাবনা পুলিশ সুপার মো: আকবর আলী মুন্সী আজ ৯ আগস্ট (শুক্রবার) সকালে পাবনা ডিবি পুলিশ কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানান গত ২৫ আগস্ট সকাল ১১.০০ টার সময় আমিনপুর থানার মোবারকপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম জনতা ব্যাংক, কাশিনাথপুর শাখা থেকে ৮,০০০০০/- (আট লক্ষ) টাকা নিয়ে ভ্যানযোগে আমিনপুর থানাধীন নান্দিয়ারা গ্রামস্থ কবরস্থানের পাশে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র একটি সাদা মাইক্রোবাস ভ্যানের গতিরোধ করে দাড়ায়। মাইক্রোর ভিতর থেকে বের হয়ে আসা কয়েক জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে টেনে হেচরে প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে একটি মাইক্রোবাসের ভিতরে তুলে চোখ বেঁধে তার নিকট থাকা নগদ ৮,০০০০০/-টাকা জোড়পূর্বক ছিনিয়ে নেয়। অত:পর আসামীগণ একই তারিখ দুপুর ১ টায় উক্ত ভিকটিমকে আমিনপুর থানার আলাদিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মাইক্রোবাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। উক্ত অভিযোগের পরিপেক্ষিতে আমিনপুর থানায় একটি দস্যুতার মামলার রজু হয়।
পাবনা পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুন্সী জানান আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতিঃ পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোঃ মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে এসআই (নিরস্ত্র) অসিত কুমার বসাক সহ পাবনা ডিবির একটি চৌকশ টিম এবং ওসি আমিনপুর জনাব রওশন আলী ও মোঃ এমরান মাহমুদ তুহিন পুলিশ পরিদর্শক তদন্তের নেতৃত্বে একটি টিমের যৌথ অভিযানে ভোলা জেলার চরফ্যাশন, ঢাকা, গাজিপুর এবং সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে ৩ দিন ব্যাপি শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত চক্রের ৬ সদস্য : সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার দহাকালা গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে মো: মাসুদ করিম (৪৭), সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার বড় পাঙ্গাসী মধ্যেপাড়া গ্রামের মৃত সাবের প্রামানিকের ছেলে মোঃ আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ (৩২), সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার উল্লাপাড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে মোঃ আরিফ (৩৩) , সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার চর আঙ্গারু গ্রামের মোঃ আব্দুর শুকুর মিয়ার ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম (৩৮), সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার বড় পাঙ্গাসী প্রামানিক পাড়ার -মোঃ আব্দুল কাদের প্রামানিকের ছেলে মোঃ মাসুদ রানা (২৯) ও উদ্ধারকৃত মাইক্রোবাসের ড্রাইভার ভোলা জেলার দুলারহাট থানার নুরাবাদ গ্রামের মৃত আহমেদেও ছেলে আলমগীর হোসেন ওরফে ডাইভার হোসেন কে প্রেপ্তার করেছে। উক্ত ডাকাত দলের মুলহোতা মোঃ মাসুদ করিম ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয় যে, যেসব ব্যক্তি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করে সেই সব ব্যক্তির পিছনে ডাকাতগণ সোর্স নিযুক্ত করে তাদেরকে ফলো করতে থাকে। সুবিধাজনক স্থানে উক্ত ভিকটিম টাকা সহ পৌঁছামাত্র ডাকাতগণ তার পথরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে হ্যান্ডক্যাপ লাগিয়ে জোরপুর্বক দ্রুত মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে তার সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে নির্জন জায়গায় ফেলে দেয়।
উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে রয়েছে একটি উই উগচ লেখা ডিবির জ্যাকেট/কটি, এক জোড়া হ্যান্ডকাফ, একটি ওয়াকিটকি সেট, পুলিশের ব্যবহৃত একটি সিগনাল লাইট, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা মাইক্রোবাস, ঘটনাস্থলে ব্যবহৃত আসামীদের ৭ টি মোবাইল সেট এবং ১০ টি সিম।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা বিভিন্ন অপরাধে আগে থেকেই জড়িত : ১। আসামী মোঃ মাসুদ করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদক সহ মোট ১০টি মামলার রয়েছে। ২। আসামী মো: আরিফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অপহরন, ছিনতাই, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদক সহ মোট ৮টি মামলার রয়েছে। ৩। আসামী মোঃ আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদক সহ মোট ৬টি মামলা রয়েছে। ৪। আসামী আলমগীর হোসেন (ড্রাইভার) এর বিরুদ্ধে ছিনতাই,মাদক সংক্রান্ত মোট ৪টি মামলা রয়েছে। আসামীদের মধ্যে মো: মাসুদ, মো: আরিফ ও আলমগীর হোসেন ড্রাইভারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা মুলতবী রয়েছে।