পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে বালু ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে।
শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার পাকশী ব্রীজের অদূরে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, পাকশী এলাকায় পদ্মা নদীর ড্রেজিং করে সরকার বালুগুলো নদীর পাড়ে রাখে। ৪ মাস আগে সেই বালুগুলো উন্মুক্ত টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিক্রি করা হয়। পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রস্তাবিত ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান পিন্টু সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৭৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকায় সেই বালু কিনে নেন।
সেই টেন্ডারে অংশ নিয়েছিলেন প্রস্তাবিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল মালিথা। কিন্তু তিনি বালু কিনতে না পারায় ক্ষুব্ধ হন। বালু কিনতে না পারা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামানের সাথে তার বিরোধ দেখা দেয়।
শনিবার বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বালু তুলতে গেলে জহুরুল মালিথার লোকজন বাধা দিলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান এর সমর্থক পৌর সদরের আলোবাগ মহল্লার মাসুম (৩০) গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও অন্য গ্রুপের অন্তত ৪ জন আহত হয় এর মধ্যে রুপপুর গ্যাস পাম্পের পাশের সুইট গুলিবিদ্ধ হয় ও আম বাগনের সম্রাট আহত হয়।
এসময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। আহতদের প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গুলিবিদ্ধ মাসুমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পাকশী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রস্তাবিত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুজ্জামান পিন্টু বলেন, বিআইডব্লিউটিএ থেকে টেন্ডারী প্রক্রিয়ার মাধ্যেম ৭৫ লক্ষ টাকায় বালু ক্রয় করি। ক্রয় করার পর থেকে অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছি। শনিবারও এসে গোলাগুলি করে চাঁদা না দেয়ায়।
তিনি বলেন, তার একজন কর্মি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাকে রাজশাহী পাঠানো হয়েছে। বাকি কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল মালিথা বলেন, ওই বালুর বিষয়ে আমি কোন টেন্ডারে অংশ নেইনি। ওটা নিয়ে আমার কোন বিষয় জড়িত নাই। তার বালু ব্যবসার পার্টনারের সাথে আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা অনেকদিন ধরে। তার পার্টনার ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা। তিনি তারপর তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কোনো হিসাব দেন না। এটা নিয়েই মূলত তাঁর ঝামেলা। ঝামেলা আপোস-মীমাংসা করে নেওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য তাকে বেশ কয়েকবার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা মানেননি।
তৃতীয় পক্ষকে সেখানে ব্যবহার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন ইউপি চেয়ারম্যান। আমাকে জড়িয়ে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা সঠিক নয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, বালুর ব্যবসা নিয়ে একটা ঝামেলার কথা আমরা জেনেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।