ইয়াছিন আরাফাত,মহেশখালী : আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ মার্চের মাঝামাঝি হতে পারে। এই ঘোষণার সাথে সাথে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে বইতে শুরু করেছে ইউনিয় পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া। এ হাওয়া লেগেছে গ্রামের কৃষক শ্রমিক জনতার মাঝে। গ্রাম মহল্লা থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে চলছে ভোটার হিসাব নিকাশ। এবার এ ইউনিয়নের জনগন চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে চুল ছেঁড়া বিশ্লেষণ। আর তাই যেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটের মাঠে প্রকাশ্য ও গোপনে নানাভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নৌকার মাঝি হতে নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতারা নানাভাবে জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের কাছে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে নৌকার টিকেট পেতে। আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন খোকন, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এডভোকেট শেখ কামাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান মেম্বার নুরুল আমিন খোকা, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট নুরুল হুদা। বলতে গেলে সোনার হরিণ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান অনেকে। তবে শক্তিশালী অবস্থানে আছেন তিনজন। মূলত তিন প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে নৌকার টিকেট পেতে। তারা হলেন, উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন খোকন, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এডভোকেট শেখ কামাল ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান মেম্বার নুরুল আমিন খোকা। এরা তিনজনের মধ্যে নৌকা পেতে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কুতুবজোমের সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে আলাপকালে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছি। ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন খোকন ক্ষমতায় থাকা কালীন এলাকার বেশ কিছু উন্নয়ন,বিচার -সালিসী ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বিরুদ্ধেী কোন অভিযোগ নাই। তার পাঁচ বছরের শাসন আমলে সন্ত্রাসীরা মাথা চড়া দিয়ে উঠতে পারেনি অত্র ইউনিয়নে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে সাগরে যারা দস্যুতা করে বেড়াত তাঁদেরকে বুঝিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে তার সহযোগিতা ছিল অতুলনীয়। করোনাকালীন সময়েও ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও সাধারণ মানুষকে সাহায্য সহযোগীতা করেছে সাধ্যের মধ্যে। তার সাথে উপজেলা আওয়ামীলীগ থেকে শুরু করে জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে বেশ সু-সম্পর্ক। আর আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপির আস্থাভাজন ও বর্তমান চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে নৌকার মনোনয়নে বেশ এগিয়ে খোকন। তার পিতা কুতুবজোমের সাবেক সফল চেয়ারম্যান মরহুম কবির আহমদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের আস্তা অর্জন করে নৌকার টিকেট পেলে আবারও কুতুবজোমের মসনদে বসতে পারেন বলে মনে করেন তৃর্ণমূলের ভোটাররা। অন্যদিকে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এডভোকেট শেখ কামাল ও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয়তা না থাকলে তার ইউনিয়নে বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে তার। যুবলীগের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে তরুণ ভোটারদের দৌঁড়ে এগিয়ে শেখ কামাল। তিনিও আস্তে আস্তে মাঠ গোছিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।বটতলী,কালামিয়া বাজার, দৈল্যার পাড়া সহ বেশ কয়েটি এলাকায় তার রয়েছে ভোট ব্যাংক। তাছাড়াও কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আলমের জামাতা হওয়ার সুবাদে সেদিকে ভোটাররা তার দিকে ঝুঁকছে। সর্বোপরি নৌকার টিকেট পেলে কুতুবজোমবাসী তরুণ নেতৃত্ব হিসাবে বেঁচে নিতে পারেন শেখ কামালকে। অন্যদিকে ঘড়িভাঙ্গা, সোনাদিয়াসহ বেশ কয়েটি এলাকায় রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। আর সেদিকে একজন প্রার্থী হওয়ায় একচেটিয়া ভোট ব্যাংকে এগিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও দুই বার নির্বাচিত মেম্বার নুরুল আমিন খোকা। সাধারণ মানুষকে সাহায্য সহযোগীতা করে পাশে থাকার সবসময় চেষ্টা করেন তিনি। করোনাকালীন সময়ে ব্যক্তিগত ভাবে সাধারণ মানুষকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। অন্যদিকে ১,২ও ৩ নং ওয়ার্ডে অধিকাংশ মানুষ জীবিকার তাগিতে মৎস্য ব্যবসার সাথে জড়িত। আর খোকা মেম্বার ফিশিং বোট ও মাছ ব্যবসায়ী হওয়ায় তাদের সাথে খুবই সু-সম্পর্ক। তিনি এলাকায় সাধারণ মানুষের পাশে সবসময় বরফের মত ভূমিকা পালন করেন। তাই তারা যে কোন মূল্যই খোকা মেম্বারকে চেয়ারম্যান হিসাবে পেতে চাই। তিনি ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। কুতুবজোম তিন প্রার্থী ছাড়াও কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম শুনলে এখনোও মাঠে প্রচার-প্রচারণা নেই সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীদের। অপরদিকে এ তিন প্রার্থী ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মান্নান তৃর্ণমূলে জনপ্রিয়তা ধরে রেখে ভোট ব্যাংক সৃষ্টি করার লক্ষে নিজ এলাকায় গণসংযোগ করে চষে বেড়াচ্ছেন। সাধারণ ভোটারদের মন জয় করে যে কেউ হতে পারে আগামীর কুতুবজোমের নতুন অভিভাবক। তবে সাধারণ মানুষের ধারণা নৌকার টিকেটেই হতে পারে কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের আগামীর কর্ণধার ও চেয়ানম্যান।