পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুরে আলোচিত রফি মন্ডল হত্যা মামলার আসামীরা জামিন নিয়ে ও জামিন না নিয়ে প্রকাশ্যে বিচরণ করে বাদী পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি, হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ভুক্তভোগী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
পাবনার পুলিশ সুপার বরাবর আইনী সহায়তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন নিহত রফিকুল ওরফে রফি মন্ডলের ভাই মৃত আজহার মন্ডলের ছেলে খাইরুল মন্ডল।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১৯ মে পাবনা সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুর ওয়াবদা বাঁধের পাশে রফিকুল ওরফে রফি মন্ডলের মুদি দোকানের সামনে তাকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর নিহতের ভাই খাইরুল মন্ডল বাদী হয়ে আতিয়ার রহমান বিশ্বাস, মতিয়ার রহমান, হাবিবুর রহমান, ছাত্তার বিশ্বাস, হানিফ মন্ডল, নাছিম মন্ডল, হাবিল মন্ডল, মহির মন্ডল, শিমুল মন্ডল, কাবেদ প্রামানিক, জাবেদ প্রামানিক, ফজলু প্রামানিক, মোক্তার খাঁ, মজনু মন্ডল, নজু মন্ডল, শফি মন্ডল, সরোয়ার মন্ডল, জাহাঙ্গীর, উম্মত, শামসুল, বাবু, বিলাই, লিটন, বাদশা, ইসলাম, রহিম, জুলমত, শিমুল, উজ্জল, শফি, সাব্বির, বাবলু, মিরাজুল, সাব্বির, মান্না ও রাজ্জাকের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং জিআর ৪৬০/১৮, দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন সেশন কেস নং ১১৫৬/২২।
অভিযোগে জানা যায়, উপরোক্ত আসামীদের অনেকেই জামিন নিয়ে ও কয়েকজন জামিন ছাড়াই প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলার ৪ নং আসামী মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে সাত্তার বিশ্বাস অন্য আসামীদের যোগসাজশে মামলার বাদী ও পরিবারের সদস্যদের নানা ভাবে প্রাণনাশের হুমকি, হত্যার চেষ্টা, বাড়ি থেকে বের হতে না দেয়া, বাড়ীর বৈদ্যুতিক লাইন কেটে দেয়াসহ নানা ভায়ে হয়রানী করছে। মামলার বাদী প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই পরিবারের সদস্য পলাশ মন্ডল নিহত রফি মন্ডল হত্যার অন্যতম সাক্ষী হওয়ায় আসামীরা চলতি বছরের পহেলা আগস্ট হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও জখম মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আসামীরা রাতের আধারে বাদীর বাড়িতে এসে মহিলাদের হুমকি ধামকি, অশ্লীল ভাষায় বকাবাজি অব্যাহত রেখেছে। এমন কি তারা সব সময় বাড়িঘর লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ঢিল ছুড়ে আতঙ্কের মধ্যে রেখেছে। নানা ধরনের নির্যাতন ও অত্যাচার করছে।
নিহত রফি মন্ডলের চাচা তারেক মন্ডল বলেন, ভাতিজা রফি মন্ডল খুনের পর থেকে আমরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছিনা। আমাদের আদালত, থানা কোথায়ও বের হতে দেয় না। নানা ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছে। আসামীরা ক্ষমতাধর হওয়ায় আমরা সব সময় উৎকন্ঠা আর আতংকের মধ্যে রয়েছি। পুলিশ প্রশাসনের কাছে আইনী সহায়তাসহ বিচারাধীন মামলায় ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকার মানুষ বলেন, আসামীরা এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ কেউ করতে সাহস পায় না। কোন প্রতিবাদ বা সাক্ষী দিলেই তার উপর নেমে আসে নানা ধরনের জুলুম। মাঝে মাঝে পুলিশ এসে ঘুরে চলে যায়। আমরা এদের অন্যায় অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ চাই।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, আমার কাছে যে অভিযোগই আসুক না কেন আমি আইনগত ব্যবস্থা নেই। তবে লিখিত অভিযোগটি এখনও হাতে পাইনি। বিষয়টি দেখবো। তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।