মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরে আইন লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপন প্রচারণায় ব্যাস্ত তামাক কোম্পানি। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এর ধারা-৫ অনুসারে বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু সারাদেশে তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কৌশলে তামাকের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিভিন্ন ব্রান্ডের প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, নাম সম্বলিত স্টিকার, লাইটার, সিগারেট বক্স। এছাড়াও নির্দিষ্ট লক্ষমাত্রা পূরণ করতে পারলে দিচ্ছে পুরষ্কার যা আইন লঙ্ঘন। মেহেরপুর জেলায় এসকল বিজ্ঞাপন বন্ধে আশ্রয় সমাজ উন্নয়ন সংস্থা ই-কোর্টে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
মেহেরপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে মৃত্যুর ফেরিওয়ালা তামাক কোম্পানিগুলো তামাক পণ্যের নাম, রং, লোগো, ট্রেডমার্ক, লাইটার, টি-শার্ট, ঘড়ি, ছাতার মাধ্যমে তাদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করছেন। শহরে মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হওয়ায় কোম্পানিগুলো বেছে নিয়েছে ছোট ছোট বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিছু জায়গায় দেখা যায় কোম্পানীর কিছু ব্র্যান্ড প্রমোশনের জন্য যুবক ছেলেদের দিয়ে প্রচারণা চলমান রেখেছে। এ সকল যুবকদের হাতে একটি ট্যাব দেওয়া আছে যার মাধ্যমে দোকানে বা বাজারের যুবক ছেলেদের কাছে নির্দিষ্ট সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট করছে। ট্যাবের মাধ্যমে দেখানো হয় উক্ত পণ্যে কি ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেটা ভালো হিসেবেই প্রচার করেন কোম্পানীর এই প্রমোশনাল দল।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট সদস্য স্বদেশ হিউম্যান অ্যাসিস্টেন্স সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মাজেদুল হক মানিক বলেন, বিজ্ঞাপন প্রচারনা বন্ধের জন্য কয়েকটি তামাক কোম্পানিকে লিখিতভাবে নিষেধ করা হয়েছে। তবুও তারা কৌশলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করছে। এভাবে প্রচারণা চলতে থাকলে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
ই-কোর্টে অভিযোগকারী সংগঠন আশ্রয় সমাজ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক এম এ হাসান সুমন বলেন, একটা সময় মেহেরপুর জেলা তামাক পণ্যের বিজ্ঞাপন মুক্ত ছিলো। বর্তমানে আবারও কোম্পানি বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। আমরা তামাক কোম্পানীগুলো আইন লঙ্ঘন না করার জন্য বার বার নিষেধ করেছি তবুও তারা গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা জেলার বিভিন্ন বাজারের চিত্র তুলে ধরে ই-কোর্টে অভিযোগ দিয়েছি। এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হলে তামাক কোম্পানিগুলো প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে পারে।
সদর উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর তারিকুল ইসলাম বলেন, মেহেরপুর শহরে নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিনা করা হয়। প্রশাসনের সহযোগীতায় নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত হওয়ার কারনে মেহেরপুরের পৌর এলাকায় তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন কম। বিজ্ঞাপনের কারনেই উঠতি বয়সের ছেলেরা আকৃষ্ট হয়। আইনের তোয়াক্কা না করেই কোম্পানি এগুলো করছে। তামাক পণ্যের এখনই বিজ্ঞাপন বন্ধ না করতে পারলে ২০৪০ সাল পর্যন্ত তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না।
জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান জানান, যে কোন আইন লঙ্ঘন কারিদের বিরুদ্ধেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। তামাক পণ্যের যে কোন প্রচারণায় ভ্রাম্যমান আদালতে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।