আল এনায়েত করিম রনি,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: সাংবাদিককে মেরে জেল হাজতে যাওয়া কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান জামিনে বের হয়ে এসে শাে-ডাউন দিয়ে তান্ডব চালায় প্রায় ঘন্টাব্যাপি। এসময় এক সরকারি কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতাকে মারধর করেন চেয়ারম্যান। আহতাবস্থায় একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৩ ডিসেম্বর বুধবার জামিন পেয়ে কুড়িগ্রাম জেল হাজত থেকে বের হয়ে আসেন চেয়ারম্যান মাহামুদুর রহমান রােজন। কুড়িগ্রাম থেকে রাত আটটার দিকে ভূরুঙ্গামারী বাসষ্ট্যান্ড পৌঁছালে তার সমর্থকরা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন নেন তাকে। পরে একটি আনন্দ মিছিল বের করেন তারা। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের তালাবদ্ধ প্রধান ফটকে হামলা চালায়। পরে ইউএনও’র বাসভবনের দিকে মিছিলটি রওয়ানা হলে পুলিশ খবর পেয়ে মিছিলটি ফেরত পাঠায়।
উপজেলা চত্বর থেকে মিছিলটি বের হয়ে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পাবলিক লাইব্রেরীর চেয়ার-টেবিল, প্রেসক্লাবের দরজা, জানালা ভাংচুর করে। পরে মিছিল নিয়ে শহরে মহড়ার দেবার সময় সাবরেজিস্টার ফখরুল ইসলামকে লাঞ্চিত করেন। পরে জননী বস্ত্রালয়ের মালিক এবং উত্তর ধরলা মটর-মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মহাদেব সাহাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেন চেয়ারম্যান। আহত মহাদেব সাহাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তর ধরলা মটর-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান কর্তৃক সাধারণ মানুষ প্রায় সময় হামলার শিকার হয়ে আসলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে আসছে। চেয়ারম্যানের প্রভাবে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে। ভূরুঙ্গামারী প্রেসক্লাব সভাপতি আনোয়ারুল হক বলেন, চেয়ারম্যানের ভয়ে উপজেলার মানুষ ভীতশস্ত্র হয়ে পড়েছে। চেয়ারম্যান লোক ভাড়া করে এবং ৪০দিনের কর্মসূচির সুবিধাভোগী নারী-পুরুষদের প্রলোভন দেখিয়ে মিছিলে নিয়ে এসেছেন।
চেয়ারম্যান পরিকল্পিত ভাবে আতংক ছড়ানোর উদ্দেশ্য এমন হামলা চালানো হয়েছে। দ্রুত চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান জানান,মিছিল নিয়ে ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনা শুনেছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা বলেন,চেয়ারম্যানের এমন আচরণে আতংকিত হয়ে পড়েছে উপজেলাবাসী। হামলার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত ১১ ডিসম্বর বিকেলে ভূরুঙ্গামারী প্রেসক্লাব সম্পাদক এমদাদুল হক মন্টুকে মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান একেএম মাহমুদুর রহমান রােজেন। এঘটনায় এমদাদুল হক মন্টু বাদী হয়ে ১৩ ডিসেম্বর ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি মামলা করলে ১৪ ডিসেম্বর অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ জেল হাজতে পাঠায়।