ম.ম.রবি ডাকুয়া,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনী প্রচারনা এখন তুঙ্গে।শেষ বারের মত জমে উঠেছে প্রচার প্রচারনা।দেশের পৌর নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন কমিশন থেকে তফসিল ঘোষণার পরপরই জমে উঠেছে এ নির্বাচনী আমেজ। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া আর প্রতীক বরাদ্ধের পর নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেকটা ব্যাস্ত সময় পার করছেন মোংলার মেয়র ও কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
মোংলা পৌর এলাকায় পুরো জায়গা অলি-গলি ছেয়ে গেছে পোস্টার ও ব্যানারে।দুপুর দুটা থেকে রাত আটটা অবধি চলে নানা রকম শ্লোগান আর মাইকিং। বন্দর নগরী এ পৌরসভার ভোটারদের মন জয় করতে বিভিন্ন রকমের আগামীর উন্নয়নের ফুলঝুরি আর লোভনীয় প্রচার-প্রচারণাও করছেন প্রধান দুই দলের মেয়র প্রার্থীরা। আগামী ১৬ জানুয়ারির নিবার্চনকে ঘিরে ওই সকল প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও।
মোংলা পোর্ট পৌরসভায় বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ জুলফিকার আলী গত ১০ বছর সীমানা জটিলতার মামলা জটে ক্ষমতায় থাকায় স্থানীয় ভোটার ও জনসাধারণ অনেক টা বিমূখ তার প্রতি।জনপ্রিয়তা হারিয়ে অনেকটা বিচ্ছিন্ন ভাবে তাকে জন বিচ্ছিন্ন ভোটে হারার মনের ভয় ও শংকা নিয়ে পৌর শহরের কিছু কিছু জায়গায় নিবার্চনী প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন পুরো পৌর শহর এলাকায়। স্থানীয় আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলের দোয়া আর ভালবাসায় শিক্ত হচ্ছেন তিনি।এছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের নিজ নিজ এলাকায় ।তবে জনসাধারন ও ভোটাররা পুরনে কাউন্সিলর দের পরিবর্তন করে নতুন ও তরুন প্রগতিশীল প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে চাচ্ছেন।
নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী বীর মু্ক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়ে আমাকে পৌরবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। মোংলার যত উন্নয়ন তা জননেত্রী শেখ হাসিনা, খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রলায়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের মাধ্যমেই হয়েছে। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মোংলাবাসীর কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছে ভোটের আহ্বান জানাচ্ছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি, নৌকায় ভোট দিবে বলে তাদের কাছ থেকে সেই প্রতিশ্রুওি পাচ্ছি। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমার সরকার ক্ষমতায় আছে, তাই আমি এই এলাকার অভিভাবক তালুকদার আব্দুল খালেকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এনে এই পৌরবাসীর প্রত্যাশা পুরণ করতে পারব।
নির্বাচন প্রচারণাকালে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মোঃ জুলফিকার আলীকে বিএনপি দলিয় স্থানীয় কোন নেতা কর্মি তেমন সমর্থন জানাচ্ছেন না।স্থানীয় অনেক দলীয় নেতা কর্মিদের সাথে অসদাচারনের কারনে তারা নৌকার সমর্থন জনিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।দলের স্থানীয় নেতা কর্মিদের মন জোগাতে না পেরে তিনি হালে পানি পাচ্ছেন না। সরেজমিনে দেখা গেছে তার অনুসারি কিছু পোড় খাওয়া দলিয় দালাল ক্যডার সাংবাদিক ও তার ভাগনে ছাড়া তার সঙ্গে কেউ নেই ।না প্রচারনায় না সমর্থনে।তিনিও নির্বাচনে জয়ের আশা ব্যক্ত করে বলেন ১৬ জানুয়ারি আমি জনগণের রায় পাব, নিশ্চয়ই পৌরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে পুনরায় নির্বাচিত করবে, ইনশাল্লাহ। মোংলা পোর্ট পৌরসভা নিবার্চনে মেয়র পদে তিনজন, নয়টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত তিনটি মহিলা ওয়ার্ডে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। নয়টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।
এবারই প্রথম ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।বিষয়টি নতুন হলেও পৌরবাসী উৎফুল্ল আর উৎসাহি। বর্তমান নিবার্চনে পৌরসভার সাধারণ ভোটারের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫২৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৬৮১ আর নারী ভোটার ১৪ হাজার ৮৪৭ জন। এর আগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নিবার্চনে এ পৌরসভায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৯৫১ জন।তবে উপজেলা নির্বাচন অফিসের গড়িমসি আর অপারগতার কারনে মোংলার কিছু ভোটাররা কর্মক্ষেত্রের কারনে বাইরের অন্যত্র ভোটার হলে তারা স্থানন্তর হতে চাইলে তা সম্ভব হয়নি।কেউ কেউ ভোটার স্থানন্তর করতে চাইলে ১৬ জানুয়ারীর নির্বাচনের পরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।মোংলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে ভোটার দের সম্প্রীতি সম্পর্কের বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজর দেয়া দারকার বলে মনে করেন স্থানীয় জন সাধারণ।
উপজেলা নিবার্চন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সব প্রার্থীকে নিবার্চনী আচরণ বিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে কাউকেই কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। ইতমধ্যে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীদেরকে নগদ জরিমানা করা হয়েছে। নিবার্চন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।