নিজস্ব প্রতিনিধি: আজকে পালিত হচ্ছে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস ২০২১। প্রতি বছর ৭ ফেব্রæয়ারি এই দিবসটি সারা বাংলাদেশ পালিত হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে প্রকাশিত এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে শিক্ষার সর্বস্তরে বাংলা ইশারা ভাষা, দেখাবে আলোর দিশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের পহেলা ফেব্রæয়ারি অমর একুশে গ্রন্থ’মেলার উদ্বোধনকালে বাংলা ইশারা ভাষাকে অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি ঘোষণা দেন এবং সে বছরের ৭ই ফেব্রæয়ারি থেকে নিয়মিত পালিত হচ্ছে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে জনসচেতনতার জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র, পাবনার উদ্দ্যোগে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয় এবং সহায়ক উপকরণ বিতরণ করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহিদ নেওয়াজ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পাবনা। প্রধান অতিথি বলেন বাংলাদেশ উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তিসহ ভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। তারা প্রমাণ করেছে অপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তুলনায় যোগ্যতায় তারা কম নয়। দেশ গঠনে তাদের ভূমিকা অপরিহার্য। তাই বাংলা ইশারা ভাষা প্রসার ও প্রচারে সরকারের পাশাপাশি অন্যান্যদের এগিয়ে আসতে হবে। স্বাগত বক্তব্যে পাবনা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট আসমা-উল-হুসনা বলেন, ভাষাকে আশ্রয় করেই বিকশিত হয়, মানুষের চিন্তা চেতনা। সভ্যতা, সমাজ , সংস্কৃতি সব কিছুই ভাষার আশ্রয়ে লালিত পালিত হয়। তাই তো বলা হয়, ভাষার দাবী, জীবনের দাবী, মনুষ্যত্বের দাবি। বাংলা ইশারা ভাষার প্রসার এখন সময়ের দাবি।
প্রতীকের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান শিক্ষা কারিকুলামে বাংলা ইশারা ভাষার অর্ন্তভূক্তর দাবি করে বলেন, বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সাধারণ জীবন-যাপনে ও অন্যদের সঙ্গে তথ্য আদান প্রদানে বাধাগ্রস্থ হন। তাই সমাজের সর্বস্ত্ররে বাংলা ইশরারা ভাষার প্রচলন প্রয়োজন। পাবনা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা আক্তার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাথে তাদের পরিবার ও অন্যদের বাংলা ইশারা ভাষায় প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ঠদের আহবান জানান। তিনি আরও বলেন পাবনায় বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা স্পেশাল অলিম্পিক গেমসে অন্যান্য জেলার তুলনায় ভাল ফলাফল করে বিশ্বে সুনাম অর্জন করেছে।
সভার সভাপতি পাবনা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম বলেন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কর্মক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় ভাল করছে। তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জব ফেয়ারে তাদের অনেকে চাকরি পেয়েছে। বিশেষ করে কেয়া কসমেটিকসে এবং মুক্তা পানি উৎপাদনে তাদের অংশগ্রণহণ চোখে পরা মত। তিনি আরও জানান পাবনা জেলায় ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে ৫ হাজারের অধিক ব্যক্তি রেজিষ্ট্রেশন করেছেন এবং ১ লক্ষের অধিক ব্যক্তি সেবা গ্রহণ করেছেন। সভা শেষে প্রধান অতিথি শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের হেয়ারিং এইডসহ অন্যান্য সহায়ক উপকরণ বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।